বাংলাদেশের ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
যুগে যুগে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আমাদের দেশের বিভিন্ন খাতে অত্যন্ত চমৎকারভাবে ভূমিকা রেখেছেন। যার ফলশ্রুতিতে আজ আমরা এই সোনার বাংলাকে দেখতে পেয়েছি। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব, বাংলাদেশের তেমন কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিয়ে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় সংস্কার, সমাজ সংস্কার, গবেষক, শিক্ষক প্রভৃতি বিষয়ক ভূমিকা প্রদানকারী। যাদের আত্মত্যাগের দানে আমরা পেয়েছি এই সোনার বাংলা। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক তাদের পরিচয় সম্পর্কে-
![]() |
বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পরিচয় |
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সংগ্রাম ও রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে সমাহিত করা হয়।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পশ্চিমবঙ্গের মেদিনিপুর জেলায় ১৮৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৫ সালে অভিভক্ত বাংলার সাম্য ও সাহিত্য শাসন মন্ত্রী, ১৯৪৩ সালে খাদ্যমন্ত্রী এবং ১৯৪৬ সালে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তার প্রচেষ্টায় ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী এবং ১৯৫৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর আসন লাভ করেন। ১৯৬৩ সালের ৫ই ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
শেরে বাংলা একে ফজলুল হক এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বরিশাল জেলার চাখারে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৮৭৩ সালে ফজলুল হক জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩৭ সালে অভিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৩৭ সালে ভারতের লক্ষ্মৌতে মুসলিম লীগের ঐতিহাসিক সম্মেলনে তিনি উর্দুতে জ্বালাময়ী ভাষণ দেয়ার পর তাকে "শেরে বাংলা" উপাধিতে ভূষিত করা হয়। তিনি এদেশে "ঋণ- সালিশি আইন" প্রবর্তন করেন। ১৯৬২ সালের ১৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের জাতির জনক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি। স্বাধীনতা আন্দোলনে তার অগ্রণী ভূমিকার জন্য তাকে "বঙ্গবন্ধু উপাধি" দেওয়া হয়। তিনি ১৮ অক্টোবর ১৯৭২ সালে "জুলিও কুরি শান্তি পদক" লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর এক সামরিক গণঅভ্যুথানে তিনি সপরিবারে নিহত হন।
স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ১৮৫৮ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার রাড়িখাল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উদ্ভিদের যে জীবন আছে তিনি তা প্রথম আবিষ্কার করেন। তিনি বিদ্যুৎ তরঙ্গ সম্পর্কে গবেষণা করেন। বেতার আবিষ্কারেও তার অবদান রয়েছে। ১৯৩৭ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।
বঙ্গবীর এম এ জি ওসমানী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বঙ্গবীর এম এ জি উসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সশস্ত্র ও মুক্তি বাহিনীর প্রধান হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮৪ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি তিনি পরলোক গমন করেন।
সার্জেন্ট জহুরুল হক এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সার্জেন্ট জহুরুল হক ১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি। পাকিস্তান সরকার তাকে ১৯৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে গুলি করে হত্যা করে।
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি
নবাব সলিমুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
নবাব সলিমুল্লাহ ঢাকার নবাব পরিবারে ১৮৬৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ। মুসলিম জাগরণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রধান উদ্যোক্ততা, আহসানুল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, যা পরবর্তীতে প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে তার অবদানে। ১৯৬০ সালে তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯১৫ সালের ১৬ই জানুয়ারি তিনি পরলোক গমন করেন।
হাজী শরীয়তুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মাদারীপুর জেলার বাহাদুরপুর গ্রামে ১৭৮১ সালে হাজী শরীয়তুল্লাহ জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ফরায়েজী আন্দোলনের নেতা ও ধর্ম সংস্কারক ছিলেন। তিনি ভন্ড পীর-ফকিরদের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন। তার এই আন্দোলন "ফরায়েজী আন্দোলন" নামে পরিচিত। তিনি শুধু একজন ধর্মীয় সংস্কারক নন, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠারও দিশারী। তিনি ১৮৪০ সালে বাহাদুরপুর গ্রামে মৃত্যুবরণ করেন।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিবপুরে ১৮৬২ সালে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সংগীত শিল্পী। হেমন্দ্র, দুর্গেশ্বরী, যেম বাহার, প্রভাতকেশী, হেম-বেহাগী, মদন-মঞ্জুরী, আরাঠোনা ইত্যাদি রাগ রাগিনির স্রষ্টা। ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন।
আবু সাঈদ চৌধুরী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
৩১ শে জানুয়ারি ১৯২১ সালে টাঙ্গাইল জেলার নাগবাড়ী গ্রামে আবু সাঈদ চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে বিচারপতি, বুদ্ধিজীবী ও রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৮৭ সালের ২ আগস্ট তিনি লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন।
এফ. আর. খান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
এফ আর খান তিনি ১৯৯২ সালের ৩ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ছিল মাদারীপুর জেলা। স্থাপত্য কলায় তার অসাধারণ কৃতিত্ব রয়েছে। সিয়ার্স টাওয়ার বিশ্বের উচ্চতম গগনচুম্বী এর নকশা প্রণয়নকারী তিনি। ২৬ মার্চ ১৯৮২ সালে জেদ্দায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
শহীদ তিতুমীর এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
তিতুমীর ১৭৮২ সালে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসত মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিতুমীরের ডাক নাম 'মীর নিসার আলী' এবং তিনিই প্রথম বাঙালি যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হন। তিনি জমিদার ও নীলকরদের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কারক হিসেবেও তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। তিনি হিন্দু-মুসলমান কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে জমিদার ও নীলকরদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে উৎসাহিত করেন। বারাসতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিতুমীর। এই বিদ্রোহ বারাসতের বিদ্রোহ নামে পরিচিত। ১৮৩১ সালে তিনি নারিকেল বাড়িয়ায় "বাঁশের কেল্লা" নির্মাণ করেন। ঐ বছরে কোম্পানি কর্নেল স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে পদাতিক ও অস্বারোহী সৈন্যের বিরাট বাহিনী পাঠায় তিতুমীরের বিরুদ্ধে। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর নারিকেল বাড়িয়ার যুদ্ধে ইংরেজদের কামানের গোলায় বিধ্বস্ত হয় বাঁশের কেল্লা। তিতুমীর ও তার ৪০ জন সঙ্গী ঐ যুদ্ধে শহীদ হন।
ডাক্তার মোহাম্মদ ইব্রাহিম এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ডাক্তার মোঃ ইব্রাহিম ১৯১১ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার বায়েরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন নামকরা চিকিৎসাবিদ। তিনি ইব্রাহিম মেমোরিয়াল ডায়াবেটিস হাসপাতাল (বারডেম) এর প্রতিষ্ঠাতা। ১৮৮৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৮৩৪ সালে কুমিল্লা জেলার লাক্সামির পশ্চিমগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তিনি একাধারে কবি, সমাজসেবী ও জমিদার। তিনি 'রূপজাল' নামক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের রচনা করেন। তিনি ১৯০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুনঃ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিভাষা
অমর্ত্য সেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১ নভেম্বর ১৯৩৩ সালে ভারতের শান্তি নিকেতনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলায়। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান। তিনি অর্থনীতিতে প্রথম এশীয় নোবেল বিজয়ী।
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯১৪ সালের কিশোরগঞ্জ জেলার কেন্দুয়ায় জনগ্রহণ করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন। জয়নুল আবেদীন তার বিখ্যাত শিল্পাচার্য ছাড়াও বাংলাদেশ আধুনিক চিত্রকলার অগ্রদূত। তার বিখ্যাত চিত্রকর্ম এর মধ্য রয়েছে- ম্যাডোনা ১৯৪৩, দাঁড়টান, গ্রামীণ রমণী, দুই জিপসী রমনী, রমণীর চুল বাধা ও মনপুরা খওর অন্যতম। তিনি চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট এবং সোনারগাঁয়ের লোকশিল্প জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৬ সালে ঢাকায় তিনি পরলোক গমন করেন।
বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৮৯৯ সালে চব্বিশ পরগনা জেলার চুরুলিয়া গ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় কবি ও রণ সংগীতের রচয়িতা। নজরুল একাধারে কবি, সাংবাদিক, অনুবাদক, সংগীত রচয়িতা, সুর শিল্পী, গদ্যকার, গল্পকার, উপন্যাসিক ও নাট্যকার। অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, চক্রবাক, দোলনচাঁপা, সর্বহারা, ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, মৃত্যুক্ষুধা ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম। তিনি 'বিদ্রোহী কবি' নামে খ্যাত। ১৯৭৪ সালের নজরুল কে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে নিয়ে আসা হয় এবং "জাতীয় কবি" ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৬ সালে নজরুল কে বাংলাদেশ সরকার নাগরিত্ব প্রদান করেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মসজিদের পাশে কবর দেয়া হয়।
আব্দুল্লাহ আল মুতি শরফুদ্দিন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আব্দুল্লাহ আল মুতি শরফুদ্দিন তিনি একজন সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। বিজ্ঞান বিষয়ক রচনাবলী- সাগরের রহস্যপুরী, রহস্যের শেষ নেই, বিজ্ঞান ও মানুষ, আবিষ্কারের নেশায়, অবাক পৃথিবী, এসো বিজ্ঞানের রাজ্য, ইত্যাদি গ্রন্থের জন্য তিনি প্রসিদ্ধ।
আব্দুল গাফফার চৌধুরী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আব্দুল গাফফার চৌধুরী তিনি একাধারে সাহিত্যিক, সাংবাদিক। তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে- চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান, নাম না জানা ভোর, নীল যমুনা, শেষ রজনীর চাঁদ, বাংলাদেশ কথা কয়, ইত্যাদি। তিনি ১৯৬৭ ও ১৯৮৩ সালে যথাক্রমে বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও একুশে পদক পেয়েছেন।
আব্বাস উদ্দিন আহমদ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আব্বাস উদ্দিন আহমদ ১৯০১ সালে কচু বিহারের বৈরামপুরে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। গ্রাম বাংলার পল্লীগীতিতে তিনি একজন অমর শিল্পী।
এঞ্জেলা গোমেজ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৬ জুলাই ১৯৫২ সালে গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ থানার মোল্লা গ্রামের মোঠবাড়ি মিশনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি গড়ে তুলেন "বাঁচতে শেখো" সংগঠন। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই তিনি এশিয়ার নোবেল বলে খ্যাত "ম্যাগসেসে পুরস্কারে" ভূষিত হন।
কায়কোবাদ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কায়কোবাদের আসল নাম কাজেম আল কোরায়শী। অমিয় ধারা, প্রেমের বাণী, অশ্রু মালা, শিব মন্দির, মহাশ্মশান, শ্মশান ভস্ম ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্য রচনা।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯০৩ সালে ফরিদপুর জেলায় পল্লী কবি জসীমউদ্দিন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পল্লী কবি নামে বিখ্যাত। তিনি একই সাথে কবি, অধ্যাপক, তথ্য ও প্রচার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্মের মধ্য রয়েছে- নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, সখিনা, বালুচর, বোবা কাহিনী, বেদের মেয়ে, পদ্মার পার উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৫৮ ও ১৯৭৮ সালে যথাক্রমে একুশে পদক ও স্বাধীনতা দিবস পদক পেয়েছেন।
গোলাম মোস্তফা এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বিশিষ্ট কবি গোলাম মোস্তফা ১৯০৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্ম হলো- রক্তরাগা বিশ্বনবী, বুলবুলিস্তান, শিকওরা, বনি আদম, হযরত আবু বক্কর (রাঃ) ইত্যাদি।
জহির রায়হান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
জহির রায়হান এর জন্ম ১৯৩৩ সালে। জহির রায়হান একাধারে বিশিষ্ট লেখক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চলচ্চিত্র পরিচালক। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো- বরফ গলা নদী, শেষ বিকেলের মেয়ে, হাজার বছর ধরে, আরেক ফাল্গুন, সংসার, বেহুলা, তার চলচ্চিত্র। স্বাধীনতার অল্প পরে দুষ্কৃতিকারীরা তাকে ১৯৭২ সালে হত্যা করে।
জীবনানন্দ দাশ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ সালে বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজি সাহিত্যর অধ্যাপক ছিলেন তিনি। রূপসী বাংলা, বনলতা সেন ও ধূসর পান্ডুলিপি তাহার উল্লেখযোগ্য কাব্য। ১৯৫৪ সালে কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।
ডক্টর মুহম্মদ ইউনুস এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ডঃ মুহম্মদ ইউনুস ১৯৪০ সালের ১৮ই জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৮ সালে তিনি "প্রেসিডেন্ট পুরস্কার" এবং ১৯৮৪ সালে "ম্যাগসেসে পুরস্কার" এবং ১৯৮৬ সালে "ইউনেস্কো পুরস্কার" লাভ করেন। ২০০৬ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের "প্রধান উপদেষ্টা" হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলো হচ্ছে- মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন, অবরোধ বাসিনী ইত্যাদি। ১৯৩২ সালে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জীবনবসান ঘটে।
বেগম সুফিয়া কামাল এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বেগম সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশাল জেলার শায়েস্তাবাদে তার মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে- সাঝের মায়া, মায়া কাজল, উদাত্ত পৃথিবী। তিনি মুসলমান নারী জাগরণের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ২০ নভেম্বর ১৯৯৯ সালে তিনি মারা যান।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯১০ সালে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য শিল্প কর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে- পদ্মা নদীর মাঝি, পুতুল নাচের ইতিকথা, শহরতলী, জীয়ন্ত, জননী, সোনার চেয়ে দামি ইত্যাদি। তিনি ১৯৬৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুনঃ সাধারণ জ্ঞান কুইজ প্রশ্ন উত্তর-২০২৪
মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালে যশোর জেলার সাগরদাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পথ প্রদর্শক। শর্মিষ্ঠা, কৃষ্ণকুমারী, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো, মেঘনাদ বধ কাব্য তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি। তিনি ১৮৭৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ডঃ মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৮৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক ও সাহিত্য গবেষক। সাহিত্য গবেষণায় ১৯৬১ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন। গল্প বিচিত্র, ভাষা ও সাহিত্য, তোষামদ, বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত তার উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম। তিনি ১৯৬৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
মীর মোশারফ হোসেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মীর মোশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জমিদার দর্পণ, বিষাদ সিন্ধু, গাজী মিয়ার বস্তানি, উদাসীন রত্নাবতী ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি ১৯১২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
শওকত ওসমান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
শওকত ওসমান ১৯১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বিশিষ্ট অধ্যাপক ও সাহিত্যিক শওকত ওসমানের প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান। ক্রীতদাসের হাসি, টাইপ মেশিন, জননী, সমুদ্র নদী সমর্পিত, জন্ম যদি তব বঙ্গে ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য রচনা। তিনি ১৯৬২ সালে ছোট গল্পে "বাংলা একাডেমী পুরস্কার" ও ১৯৬৮ সালে "প্রেসিডেন্ট পুরস্কার" এবং ১৯৮৩ সালে "একুশে পদক" পান। ১৪ মে ১৯৯৮ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯৫৬ সালের রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে- মানুষের মানচিত্র, ছোবল, ফিরে চাই স্বর্ণ গ্রাম, উপদ্রুত উপকূল, মৌলিক মুখোশ, বিষ বৃক্ষের বীজ ইত্যাদি। তিনি ১৯৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ১৯৪৩ সালে বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে- খোয়াবনামা, চিলেকোঠার সেপাই, খোঁয়ারী, দুধভাতে উৎপাত, দোযখের ওম, অন্য ঘরে অন্য স্বরে ইত্যাদি। তিনি ১৯৯৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
শহীদুল্লাহ কায়সার এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
শহীদুল্লাহ কায়সার ১৯২৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে সাহিত্যিক ও সাংবাদিক। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম শহীদ বুদ্ধিজীবী। সংশপ্তক, সারেং বউ, রাজবন্দীর রোজনামচা, পেশোয়ার থেকে তাসখন্ড ইত্যাদি তার কালো জয়ী রচনা। তিনি ১৯৬৯ সালে উপন্যাসে "বাংলা একাডেমী পুরস্কার" ও ১৯৮৩ সালের সাংবাদিকতায় (মরণোত্তর) "স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার" পান। তিনি ১৯৭১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ১৯২২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সৈয়দ অলিউল্লাহ একজন উপন্যাসিক ও সরকারি কর্মচারী ছিলেন। তিনি ১৯৮৪ সালের শিক্ষায় "একুশে পদক" (মরণোত্তর) পান। লালসালু, চাঁদের অমাবস্যা, কাঁদো নদী কাঁদো ইত্যাদি তার কালোজয়ী রচনা। তিনি ১৯৭১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
সৈয়দ আলী আহসান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সৈয়দ আলী আহসান ২৬ মার্চ ১৯১২ সালে মাগুরা জেলার আলোকদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রখ্যাত কবি, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও বিদগ্ধ পন্ডিত ছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের ইংরেজি অনুবাদ করেন তিনি। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯৬০ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছিলেন। ১৯৮৯ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচিত হন। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক, মাইকেল মধুসূদন সাহিত্য পুরস্কার, ফরাসি সরকারের Officer De Lordre Des Et Desletters সনদসহ অনেক পুরস্কার লাভ করেন। তার প্রথম লেখা ইংরেজি কবিতা The Rose। এছাড়াও Our Heritage, Step to English, গল্প সঞ্চয়ন, অনেক আকাশ, একক সন্ধ্যায় বসন্ত তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ২৫ জুলাই ২০০২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে সমাহিত করা হয়।
কামরুল হাসান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
কামরুল হাসানের জন্ম ১৯২১ সালের ২ ডিসেম্বর, কলকাতায়। তিনি শিল্পী জয়নুল আবেদীনের সাথে যোগ দেন আর্ট ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কাজে। আমাদের লোকশিল্পের ধারাকে উজ্জীবিত ও উৎসাহিত করার লক্ষ্য তিনি নানারকম পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের ধারা তৈরি করেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীকের রূপকার। বাংলার শ্রেষ্ঠ পটুয়া কামরুল হাসান মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি।
এস এম সুলতান এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
শিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০০১ সালের জুলাই মাসে সুলতানের বসতবাড়ি সংলগ্ন দুই একর ৫৭ শতক জমিতে "শিশুস্বর্গ" ও "সুলতানের স্মৃতি সংগ্রহশালা" নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে শেষ হয়। বাংলাদেশ সরকার তাকে "আর্টিস্ট ইন রেসিডেন্ট" এর সম্মানে ভূ্ষিত করে এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হতে তাকে "ম্যান অব এশিয়া" পদকে ভূষিত করে। তার উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম তুলির আচড়ে দেশ, পাটকাটা, ধান কাটা, চর দখল, জলকে চলা, ধান ভানা। তার মৃত্যু ১০ অক্টোবর ১৯৯৪ সালে।
ডক্টর কুদরত ই খুদা এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
রসায়নবিদ গ্রন্থকার শিক্ষাবিদ কুদরত ই খুদা ১৯০০ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের বীরভূমের মাড়গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা পূর্ণ গঠনের জন্য যে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় বহু সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী ডঃ কুদরত ই খুদা তার সভাপতি নির্বাচিত হন এবং তার সুযোগ্য নেতৃত্বে 'বাংলাদেশ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট' প্রণীত হয়। ১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
খান জাহান আলী এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
খান জাহান আলী বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক ও শাসক ছিলেন। তিনি সুলতানি আমলে বঙ্গদেশে আসেন। প্রথমে যশোর অঞ্চলে ধর্ম প্রচার ও নানা জনহিত কর কাজ শুরু করেন এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর তিনি বৃহত্তম খুলনা জেলার বাগেরহাট অঞ্চলে (বর্তমানে) আস্তানা স্থাপন করেন। খান জাহান আলীর অমর কীর্তি বাগেরহাটের "ষাট গম্বুজ মসজিদ"। ১৪৫১ সালের ২৫ অক্টোবর তিনি ইন্তেকাল করেন। ষাট গম্বুজ মসজিদের সামান্য দূরে তার কবর রয়েছে।
অতীশ দীপঙ্কর এই সংক্ষিপ্ত পরিচয়
৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে রাজা কল্যাণশ্রী ও রানী প্রভাবতীর মধ্যম পুত্র চন্দ্রগর্ভ (অতীশ দীপঙ্কর) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রথম জীবনের তান্ত্রিক ধর্মের দীক্ষা গ্রহণ করেন, পরে বৌদ্ধ ভিক্ষু হয়ে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হন। তিব্বতের রাজার আমন্ত্রণে ৫৮ বছর বয়সে বিক্রমশীল বিহার থেকে তিব্বতে যান। সেখানে মহাজ্ঞা বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করেন। দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা অনুবাদ ও সম্পাদনা করে "গুরু" হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিব্বতবাসীরা শ্রেষ্ঠ গুরু হিসেবে গৌতম বুদ্ধের পরেই তাকে সম্মান ও পূজা করেন।
হীরালাল সেন এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
বাংলা চলচ্চিত্রের জনক হীরালাল সেন ১৮৬৬ সালে মানিকগঞ্জের বগজুড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৯৮ সালের চলচ্চিত্রের জন্য যান্ত্রিক সাজসরঞ্জাম ক্রয় করে কলকাতার ক্লাসিক থিয়েটারে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু করেন। ছোট ভাই মতিলাল সেনকে নিয়ে গড়ে তোলেন রয়েল বায়োস্কোপ কোম্পানি। তৎকালীন প্রখ্যাত নাট্য প্রযোজক, নাট্যকার ও নট অমর দত্তের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় জনপ্রিয় বাংলা নাটকের বিশেষ বিশেষ দৃশ্য চলচ্চিত্রায়িত করে ১৯০১ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত তার নির্মিত 'স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি'র সংখ্যা প্রায় ৪০ টি। বাংলা চলচ্চিত্র ইতিহাসে তিনি প্রথম পুরুষের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। এই স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ১৯৭১ সালে কলকাতার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ১৯১১ সালে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সংবাদজগৎ, রাজনৈতিক অঙ্গগণ ও পাঠক মহলে 'মানিক মিয়া' নামের সমধিক পরিচিত ছিলেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গঠিত হলে দলীয় মুখ্যপত্র হিসেবে মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে প্রকাশিত হয় 'সাপ্তাহিক ইত্তেফাক'। তফাজ্জল হোসেন ১৯৫১ সালের ১৪ই আগস্ট পত্রিকাটির সম্পাদক নিযুক্ত হন। সাপ্তাহিক ইত্তেফাক ১৯৫৩ সালের রূপান্তরিত হয় "দৈনিক ইত্তেফাকে"। অনন্য ব্যক্তিত্ব মানিক মিয়া ১৯৬৯ সালের ৩১ মে পাকিস্তানের রাজধানী রাওয়ালপিন্ডিতে আকস্মিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আরও পড়ুনঃ সাধারণ জ্ঞান বিশ্বের সকল ধর্ম সম্পর্কে।
ব্রজেন দাস এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
ব্রজেন দাস ১৯২৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বিক্রমপুরের কুচিয়ামোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন "বিখ্যাত সাঁতারু"। বিশ্ব ক্রীড়া জগতে বাঙালির সাফল্য স্বীকৃতি প্রথম আদায় করেছিলেন তিনি 'ইংলিশ চ্যানেল' অতিক্রম করে। সর্বমোট ছয়বার তিনি ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন ১৯৫৮-১৯৫৯ ১৯০৭ ও ১৯৬১ সালে অর্থাৎ চার বছরে। ১৯৬১ সালের সাতারে তিনি বিশ্ব রেকর্ড ভঙ্গ করেছিলেন এবং ১৯৯৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সত্যজিৎ রায়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সর্বোপরি বাঙ্গালীদের জীবনধারাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন ক্যামেরাবন্দী করে। তিনি বাংলা এবং উপমহাদেশের শুধু নন, গোটা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকার। তার পথের পাঁচালীর মাধ্যমে যেভাবে বাংলা সমাজকে বিশ্বে চিত্রিত করেছেন, তা অনন্য। চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১৯২১ সালের ২ মে। চলচ্চিত্রাঙ্গনে তার পা পড়ে ১৯৫২ সালে। তিনি 'চলচ্চিত্রের সেরা পুরস্কার অস্কার' পান জীবনের শেষ লগ্নে ১৯৯২ সালে। একই বছর ২৩ এপ্রিল তার জীবনবসান ঘটে।
আরজ আলী মাতুব্বর এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর ১৩০৭ বঙ্গাব্দের তিন পৌষ বরিশালের লামচড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্ব গ্রামে মুন্সী আব্দুল করিমের মক্তবে সীতানাথে বসাকের "আদর্শ লিপি" অধ্যায়ন করেন। লৌকিক দার্শনিক হিসেবে খ্যাত দার্শনিক আরজ আলীর রচনার ভাববস্তু জনজীবনের চিন্তাচেতনা। জগৎ ও জীবন সম্পর্কে নানামুখী জিজ্ঞাসা যে চিত্র তার লেখায় উপস্থাপিত হয়েছে তাতে তার প্রজ্ঞা, মুক্তিচিন্তা ও মুক্ত বুদ্ধির পরিচয় মিলে। তার প্রকাশিত গ্রন্থ হচ্ছে সত্যের সন্ধান (১৯৭৩), সৃষ্টি রহস্য (১৯৭৮) ও স্মরণিকা (১৯৮২)। এছাড়া তার মৃত্যুর সব লেখা নিয়ে খন্ডে প্রকাশিত হয়েছে আরব আলি মাতুব্বর রচনা সমগ্র। ১৯৯২ বঙ্গাব্দের চৈত্র বরিশাল মেডিকেল কলেজে মৃত্যুবরণ করেন।
পরিশেষেঃ
আলোচনা পরিশেষে এসে বলা যায় যে, আজকের এই সামান্য টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ যেমন- কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, গবেষক, শিল্পী, সংগীত শিল্পী, ধর্ম সংস্কারক, সমাজ সংস্কারক, লেখক, পাঠক, ক্রীড়াবিদ প্রভৃতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
প্রিয় পাঠক, আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করে অন্যকেও পড়ার সুযোগ করে দিবেন এবং আমার লেখায় যদি কোন রকম ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অনুগ্রহ করে কমেন্ট বক্সে তা অবগত করবেন। আমি কারেকশন করার চেষ্টা করব। ধন্যবাদ।।