অনুচ্ছেদঃ দুর্নীতি। মূল্যবৃদ্ধি। একটি বৃষ্টির দিন
অনুচ্ছেদঃ দুর্নীতি
দুর্নীতি বলতে দেশের আইন-কানুনবিরোধী এবং নৈতিকতাবিহীনভাবে কোনকিছু প্রাপ্তিতে অসদুপায় অবলম্বন করাকে বোঝায়। বিশ্ব ব্যাংক এবং টিআইটি এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, "এটা হলো ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি অফিসে অপকর্ম।" বর্তমানে দুর্নীতি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, সরকারি, বেসরকারি, এমনকি লোকাল বিভাগেও দুর্নীতি জড়িয়ে গেছে। দুর্নীতি একটি সামাজিক শত্রু। নৈতিকতার অবনতি এবং অনিয়মই দুর্নীতির প্রধান কারণ বিবেকহীন, কার্যক্রম, অর্থলিপ্সা এবং সম্পদ সংগ্রহে অতিরিক্ত প্রবণতা, পৈশাচিক মনোভাব এসবই দুর্নীতির মূল। এছাড়া সামাজিক দুর্নীতিতে কিছু ব্যক্তিগত কারণ নিহিত রয়েছে। পুঁজিবাদ অর্থনৈতিক পদ্ধতি, সম্পদের অসম বণ্টন, যোগান ও চাহিদার মধ্যে ব্যাপক তফাৎ, ঋণ পরিশোধে অক্ষমতা, ব্যয়বহুল জীবনযাপন, বেকারত্ব প্রভৃতি দুর্নীতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণ। অধিকন্তু, সরকারের দুর্বল প্রশাসন এবং সামাজিক আইনের হস্তক্ষেপ দুর্নীতি ছড়িয়ে দেয়। একটি বিদেশি প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে যে, দুর্নীতি আমাদের জিডিপি ৩% হ্রাস করেছে এবং উন্নয়ন বাজেটের ৪২% অপচয়ের কারণ। দেশের স্বার্থেই দুর্নীতি নিরোধ আবশ্যক। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে এর জনগণকে দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনের ভূমিকা নিতে হবে এবং দায়িত্বশীল জবাবদিহিতাপূর্ণ, কর্তব্যপরায়ণ এবং বিবেকবান হতে হবে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের শাস্তি দিতে হবে। আমাদেরকে সামাজিক অবিচার ও বৈষম্য, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য দূর করতে হবে। এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিশনকে কার্যকারী ও স্বাধীন করা উচিত যাতে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে একে প্রতিরোধ করতে পারে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা গড়ে তুলতে আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
![]() |
দুর্নীতি দমনের উপায় |
অনুচ্ছেদ: মূল্যবৃদ্ধি
বর্তমানে আমাদের আর্থসামাজিক জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি একটি বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি হলো মধ্যবৃত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত লোকদের জন্য একটি চিন্তনীয় সমস্যা। মূল্য হলো জিনিসপত্রের পণ্যের মাপকাঠি। মূল্য নির্ধারণের পর জনগণের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য জিনিসপত্র বাজার থেকে তুলে দেওয়া হয়। মূলবৃদ্ধি পায়, যখন সরবরাহ কমে যায়। নিম্নের কারণগুলো মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। পণ্যের স্বল্পতা, দেশের রাজনৈতিক সমস্যা, উৎপাদন, যোগাযোগ সমস্যা, কাঁচামালের স্বল্পতা সরবরাহের চেয়ে অধিক চাহিদা, রাষ্ট্রে দুঃশাসন, চোরাকারবারিদের ভণ্ডামিপূর্ণ নীতি ইত্যাদি। মূল্যবৃদ্ধির উপযুক্ত কারণ থাকা উচিত। কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখি মূল্য বৃদ্ধি একটি অতি সাধারণ ব্যাপার। ব্যবসায়ীগণ কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ দেখানো ছাড়াই তাদের পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো অবৈধ অর্থ উপার্জন করা। এটি খুব দুঃখজনক যে মূল্য বৃদ্ধির কারণে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী দেশগুলো জীবন ধারণের প্রশ্নে অসহায় হয়ে পড়ে। কম-বেশি সকল মানুষ মূল্যবৃদ্ধি সমস্যার জন্য অধিক কষ্ট পায়। তাই, সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে সরকারের একটি ফলপ্রসূ পদক্ষেপ হাতে নেওয়া উচিত। তাছাড়া, অর্থনীতি সঠিকভাবে চলতে পারে না।
অনুচ্ছেদ: একটি বৃষ্টির দিন
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। উক্ত ছয় ঋতুর মধ্যে একটি হলো বর্ষাকাল। বর্ষাকালে সারাদিন ধরে বৃষ্টি হয়। এমন দিনে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে। সূর্য মোটেই দেখা যায় না। দিনটি বিষণ্ণ ও একঘেঁয়েমি মনে হয়। কখনো খুব জোরে ও কখনো খুব আস্তে বৃষ্টি হয়। প্রায়ই আকাশে বিদ্যুৎ ঝলকানি বজ্রপাতের শব্দ শোনা যায়। পাখিদেরকে আকাশে কম উড়তে দেখা যায়। তারা গাছের ডালে দাঁড়িয়ে থাকে। গরু-বাছুর গোয়ালে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। বৃষ্টির দিনে লোকজনকে গৃহবন্দি থাকতে হয়। রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। কেউ সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে না। কেউ সাধারণত প্রয়োজন ছাড়া বের হয় না। গরিবরা অধিক কষ্ট ভোগ করে। তারা তাদের উপার্জনের জন্য বের হতে পারে না। এটি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি আনন্দের বিষয়, কারণ সে দিন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় না। তখন কিছু লোক গল্প গুজব করে, তাস খেলে, গান গেয়ে বা গান শুনে সময় কাটায়। সর্বোপরি, একটি বৃষ্টির দিন আনন্দ ও দুঃখ উভয়ই দান করে। এটি বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য বিভিন্নভাবে আগমন করে। এটি ধনীদের আনন্দ ও গরিবদের জন্য দুঃখের বিষয়। এটা ছাড়াও এটি নানাদিক দিয়ে আমাদের জন্য উপকারী।