Natok: Romeo & Juliet | রোমিও ও জুলিয়েট বাংলা ভাষায় অনুবাদ | উইলিয়াম শেক্সপিয়ার
ভেরোনা শহর একটি জনবহুল এলাকা। ক্যাপিউলেট পরিবারের দুই ভৃত্য স্যাম্পসন ও গ্রেগরি, মন্টেও পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে ঝগড়ার জন্য তৈরী। স্যাম্পসন বলল, দেখবি কেমন চট করে ওদের মারটা দেব?- গ্রেগরি বলল, দিবিটা কি করে? তোর তো নড়তে চড়ইতেই ছ'মাস লাগে।
হ্যাঁ লাগে, কিন্তু মন্টেগুদের বাড়ির ওই কুকুরটা এ ব্যাপারে আমার উৎসাহটা জাগিয়ে দিয়েছে।
তার মানে তুই কুকুরটার ভয়ে পালিয়ে এসেছিলি? -না, ওদের বাড়ির একটা কুকুর আমাকে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে উৎসাহ জুগিয়েছে, এটাই হলো কথা। গ্রেগরি বলে ঝগড়াটা আসলে দুই পরিবারের মধ্যেই তাই না? আমরা তো ওদের চাকর-বাকর মাত্র।
ওই একই হলো, বলে স্যাম্পসন।
মন্টেগু পরিবারের দুই ভৃত্য আব্রাহাম ও বালথাজারকে আসতে দেখে স্যাম্পসন বলল, তুই ঝগড়া বাঁধা, আমি তোর পেছনে আছি।
![]() |
নাটক: রোমিও এ্যান্ড জুলিয়েট। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। |
তার মানে তো তুই পেছন ফিরে পালাবি। স্যাম্পসন বলল, না, সে ভয় করিস না। আচ্ছা আইনটাকে নিজেদের দিকে নিয়ে আসা যাক, ওরা আগে ঝগড়া শুরু করুক।
গ্রেগরি বলল, তাহলে আমি বরং ওদের পাশ দিয়ে যাবার সময় ওদের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকাই।
-না ওতে কাজ হবে না, আমি বরং ওদেরকে বুড়ো আঙুল দেখাই; ওরা সেটা সহ্য করলে ওদের পক্ষে অপমানই হবে।
স্যাম্পসনকে বুড়ো আঙুল দেখাতে দেখে মন্টেগু পরিবারের অ্যাব্রাহাম এগিয়ে এসে বলল, তুমি কি আমাদের লক্ষ্য করে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছো?
হ্যাঁ, বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছি, জবাব দেয় স্যাম্পসন।
মন্টেগু বলে সেটা কি আমাদের লক্ষ্য করে?
স্যাম্পসন ও গ্রেগরি ফিসফিস করে পরামর্শ করে আইনটা নিজেদের পক্ষে আনা গেছে কিনা, তারপর স্যাম্পসন বলে, না তোমাদের লক্ষ্য করে নয় এমনি বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছি।
গ্রেগরি জিজ্ঞেস করে, তোমরা কি আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করবে?
না।
স্যাম্পসন বলল, কিন্তু যদি করো তাহলে আমরাও ছেড়ে দেব না। আমাদের মনিব তোমাদের মনিবের মতোই ভাল লোক। আব্রাহাম ঠাট্টার সুরে বলে আর কিছু না!
ব্যাস, শুরু হয় দু'পক্ষের মারামারি। এই সময় এসে পড়ে মন্টেণ্ডর ভাইপো, রোমিওর বন্ধু বেনভোলিও। দু'পক্ষের ভৃত্যদের মারামারি থামাবার চেষ্টা করে সে কিন্তু এর মধ্যে সেখানে এসে হাজির হয় লেডী ক্যাপিউলেটর ভাইপো টাইবল্ট। সে এসেই খোলা তরোয়াল নিয়ে বেনভোলিওর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে চায়। বেনভোলিও বলল, দেখ বাপু, আমি শান্তি বজায় রাখতে চাই; হয় তরোয়ালটা খাপে পোরো আর নয়তো এদের মারামারি ছাড়াতে আমাকে সাহায্য করো।
শান্তির কথা বলছো! ওই শব্দটাকেই আমি ঘৃণা করি, মণ্টেণ্ড পরিবারের সবাই তাই করে, তার চেয়ে মজাটা দেখো। আবার লড়াই শুরু করে টাইবল্ট। চারপাশে ভিড় জমে যায়, চলে হৈ-হট্টগোল, চেঁচামেচি।
ক্যাপিউলেট পরিবারের বুড়ো কর্তা ও লেডী ক্যাপিউলেট এসে উপস্থিত হলেন। জানতে চাইলেন, অত গোলমাল কিসের। তারপরই উত্তেজিতভাবে স্ত্রীকে বললেন, দাও তো আমার লম্বা তরোয়ালখানা।
তরোয়াল। তরোয়াল কি হবে! অবাক হলেন লেডী ক্যাপিউলেট, তুমি হাতের ছুড়িটা চাইছো কি। -ছুড়ি নয়, তরোয়াল, দেখছ না বুড়ো মন্টেগু তার তরোয়ালটা দোলাতে দোলাতে এদিকেই আসছে। তারপরেই মন্টেগু পরিবারের কর্তা তার স্ত্রী এসে হাজির। এই যে শয়তান ক্যাপিউলেট, আমার পথ আটকিও না, যেতে দাও, বললেন মন্টেগু। স্বামীর মেজাজের সঙ্গে তাল মেলালেন লেডা মন্টেগু। আবার ঝগড়া শুরু হয়। এমন সময় সদলবলে সেখানে এসে পড়েন ভেরোনার রাজা এসকেলাস। এসেই তিনি হুঙ্কার ছাড়েন, এই যে মস্তানের দল, তোমরা নিজেদের অস্ত্র মাটিতে ফেলে দাও। কয়েকবারই তোমরা শহরের রাস্তায় ঝামেলা করে শান্তি বিঘ্নিত করেছ। ক্যাপিউলেট ও মন্টেশু, আপনারা বয়স্ক মানুষ কিন্তু আপনারাও এই শান্তিভঙ্গে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। এরপরেও এ রকম কিছু ঘটলে আপনাদের শাস্তি মৃত্যু। তোমরা যে যার কাজে চলে যাও। ক্যাপিউলেট, আপনি এখনই আমার সঙ্গে চলুন আর মণ্টেণ্ড, আপনি দুপুরে সাধারণ বিচারসভায় আসবেন। মন্টেগু, তাঁর স্ত্রী ও বেনভোলিও বাদে সবাই চলে যায়। মন্টেগু বেনভোলিওকে জিজ্ঞেস করলেন, ঝামেলাটা নতুন করে শুরু করল কে? তুমি কি সে সময় ছিলে?
আমি এসে দেখি দু'পক্ষের কাজের লোকেরা পরস্পরের মধ্যে মারামারি করছে; তাদের ছাড়াতে যাচ্ছি এমন সময় খোলা তরোয়াল হাতে টাইবল্ট এসে হাজির। আমার কথা না শুনেই সে তরোয়াল ঘোরাতে শুরু করল, তাই বাধ্য হয়ে আমাকেও লড়াইয়ে নামতে হলো, সমস্ত ঘটানাটাই বলে বেনভোলিও।
রোমিও কোথায়? ওকে আজ দেখেছ? বেনভোলিওকে জিজ্ঞেস করেন লেডী মন্টেণ্ড।
মনটা চঞ্চল থাকায় আজ খুব ভোরে বেড়াতে বেরিয়েছিলাম, বেনভোলিও বলল, শহরের পশ্চিমের জঙ্গলে একটা ঝোপের নীচে ওকে বসে থাকতে দেখলাম, কিন্তু কাছে যাওয়ার আগেই আমার উপস্থিতি টের পেয়ে সে জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়ল। নিজের ব্যাপারে চিন্তিত থাকায় আমিও আর ব্যাপারটা নিয়ে মাথা ঘামাইনি। আজকাল অনেকদিনই নাকি সকালে তাকে ওখানে দেখা যাচ্ছে। মন্টেগু বললেন, চোখের জল ফেলে ও নাকি ভোরের শিশিরের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে তুলছে আর ওর দীর্ঘশ্বাস মেঘের ওপরে আরও মেঘ তৈরী হচ্ছে। প্রত্যেক দিন ভোরে ও বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে, আবার বাড়িতেও জানালা দরজা বন্ধ করে বসে থাকছে। ওর মনের দুঃখটা তো দুর করা দরকার। বেনভোলিও জিজ্ঞেস করেন, ওর দুঃখের কারণ আপনি জানেন? না।
আপনি কি এ ব্যাপারে ওকে কিছু জিজ্ঞেস করেছেন? হ্যাঁ, আমিও করেছি, ওর বন্ধুরা করেছে কিন্তু সে তো কিছু বলেনি, নিজের কাছেই নিজের মনের কথা লুকিয়ে রেখেছে, কারণটা জানতে পারলে কিছু ব্যবস্থা নেওয়াই যেতে পারে।
রোমিওকে আসতে দেখে বেনভোলিও বলে, কাকা, আপনারা এখন চলে যান, আমি ওর দুঃখটা জেনে নিচ্ছি।
মন্টেগু ও লেডী মন্টেগু চলে গেলেন। বেনভোলিও রোমিওকে সুপ্রভাত জানায়। কিছুটা বিশ্বয়ের সঙ্গে রোমিও বলে, এখনও কি প্রভাত আছে?
আছে, এখন সবে বেলা ন'টা।
তাই! দুঃখের সময়গুলো বড় দীর্ঘ মনে হয়, রোমিও বন্ধুকে জিজ্ঞেস করে, বাবাকে যেন তাড়াতাড়ি করে চলে যেতে দেখলাম!
হ্যাঁ, তারপর বেনভোলিও জিজ্ঞেস করলে, তোমার মনের দুঃখটা কি জানতে পারি যার জন্যে সময়কে তোমার দীর্ঘ লাগছে?
যা পেলে সময়কে সংক্ষিপ্ত লাগতো তা পাইনি বলে, উত্তর দেয় রোমিও।
সেটা কি প্রেমে পড়ে?
না, বরং প্রেম থেকে ছিটকে পড়ে।
বেনভোলিও বলে, হায় প্রেম। তোমাকে ভাবতে ভাল লাগে কিন্তু আসলে তুমি কি কঠোর!
যন্ত্রণাময়। বড়ই গোলমেলে, সায় দেয় রোমিও। রাস্তায় তখনও মারামারির চিহ্ন এধারে-ওধারে ছড়ানো, সেদিকে লক্ষ্য করে রোমিও বলে, এসব কি? ও বলতে হবে না বুঝেছি, সেই পারিবারিক ঝগড়াঝাঁটির ইতিহাস যার নীট ফল শূন্য-কতকগুলো অর্থহীন ব্যাপার-স্যাপার। আমার ভালবাসা এসবের উর্ধে- কি, আমার কথা শুনে তোমার হাসি পাচ্ছে না?
না, কান্না পাচ্ছে।
কিসের জন্যে?
তোমার হৃদয়ের যন্ত্রণাকে উপলব্ধি করে। আমার নিজের দুঃখই বুকের মধ্যে চেপে বসে আছে, তার ওপর তোমার দুঃখটা চাপলে সেটা বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। দেখ, প্রেম জিনিষটা দীর্ঘশ্বাসের বাষ্প দিয়ে তৈরী ধোঁয়া, পরিশোধিত হয়ে সে হয় প্রেমিকের অশ্রুজলের সাগর।
চলে যেতে চাচ্ছিল রোমিও কিন্তু বেনভোলিও তাকে ছাড়ে না, বলে দাঁড়াও আমিও তোমার সঙ্গে যাব। আমাকে ছেড়ে যাওয়া তোমার পক্ষে উচিত হবে না।
কিন্তু আমি তো আমাতে নেই, রোমিও বলে, সব কিছু হারিয়ে বসে আছি। এই যে আমি- এ আমি রোমিও নয়, রোমিও অন্য কোথাও রয়েছে।
তুমি আমায় বলে ফেলো তো কার ভালবাসায় তুমি এত মনমরা হয়ে আছ?
আমি কি আর্তনাদের সঙ্গে বলব?
আর্তনাদ। না, না, তা কেন, না হয় দুঃখের সঙ্গে বলো সে কে।
হ্যাঁ, দুঃখের সঙ্গেই বলছি আমি একটি মেয়েকে ভালবাসি।
তাহলে তো আমি ঠিকই ভেবেছিলাম।
হ্যাঁ, সে সুন্দরীও।
তাহলে আর লক্ষ্যভেদ করতে অসুবিধে কোথায়?
ওইখানেই মুস্কিল। প্রেমের ফাঁদে পা দিতে সে রাজি নয়। তার অমন সৌন্দর্য কারো কাজেই আসবে না।
তাহলে কি সে সারা জীবন অবিবাহিতাই থাকবে?
হ্যাঁ, তাই, সে একটু বেশী গম্ভীর; আমার ভালবাসায় সে সাড়া দেয় না; আর সেইজন্যে হতাশা
আমার মনকে আচ্ছন্ন করছে।
বেনভোলিও বললে, আমার কথা শোন, ওর কথা ভাবতে ভুলে যাও।
কেমন করে ভাবতে ভুলব, সেটা শেখাও।
তোমার চোখ দুটোকে স্বাধীনতা দাও যাতে তারা অন্য সৌন্দর্যের সন্ধান করে।
কিন্তু তুমি কি একজনকেও দেখাতে পারবে যার সৌন্দর্য ওর পাশে রাখা যেতে পারে। বন্ধু, তুমি
আমায় ওকে ভোলাতে পারবে না।
না পারলে মরবে, বলে বেনভোলিও।
ভেরোনার রাজা ক্যাপিউলেট ও মন্টেগুকে সতর্ক করে ছেড়ে দেন। রাজার এক আত্মীয় প্যারিস ক্যাপিউলেটের কাছে আসে তার মেয়ে জুলিয়েটের পাণিপ্রার্থী হয়ে। ক্যাপিউলেট বললেন, আমার মেয়ের বয়েস এখনও চৌদ্দ পুরোয়নি, আর দ'বছর যাক।
ওর চেয়েও ছোট মেয়েরা কিন্তু মা হিসেবে সুখী হয়েছে, ক্যাপিউলেটের কথা মানতে রাজি নয়
প্যারিস।
তারা আবার অকালে ঝরেও গেছে। ওই মেয়েই আমার আশা ভরসা। তার চেয়ে ওর সঙ্গে মেলামেশা করো, ওর মন পাও-ওর ইচ্ছেই আমার ইচ্ছে। আজ আমার বাড়িতে ভোজসভার আয়োজন করেছি গণ্যমান্যরা থাকবেন, সেই সঙ্গে সেরা সুন্দরীরাও। তুমিও এসো, দেখো, শোন, তারপর সেরাটিকে পছন্দ করো।
এক ভৃত্যের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে ক্যাপিউলেট বললেন, এখানে অনেকের নাম ঠিকানা লেখা আছে তুই তাদের সবাইকে আজকের ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানিয়ে আয়।
ক্যাপিউলেট ও প্যারিস চলে গেলেন ভৃত্যটি আপন মনে গজ গজ করতে থাকে কারণ সে লেখাপড়া জানে না- তার কাছে সবই সমান। এমন সময় কথা বলতে বলতে বেনভোলিও ও রোমিও সেখানে এসে পড়ে। বেনভোলিও তখনও রোমিওকে সেই একই উপদেশ দিচ্ছিল, বন্ধু নতুন কাউকে ভালবাসো, দেখবে পুরনো প্রেমের জ্বালা নিভে যাবে।
বাঃ তোমার ওই কলাপাতা দিয়ে যন্ত্রণা কমাবার মতলবটা তো দারুণ, রোমিওর কথায় কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ পায়।
সেটা বুঝে বেনভোলিও বলে, রোমিও, তুমি কি পাগল হয়ে গেছ?
না, পাগল হইনি তবে পাগলের থেকেও খারাপ অবস্থায় আছি। আমার মনে হচ্ছে যেন বন্দী অবস্থায় আমাকে চাবুক মারা হচ্ছে।
তাদের কথাবার্তার মধ্যে ক্যাপিউলেটের ভৃত্য এসে জিজ্ঞেস করে স্যার, আপনারা পড়তে পারেন?
মান হেসে রোমিও বলে, নিজের দুর্ভাগ্যকে অন্ততঃ পড়তে পারি।
সেটা জানার জন্যে তো বই পড়ার দরকার হয় না। কিন্তু এই কাগজে কি লেখা ভৃত্যটি বলে, আছে সেটা পড়তে পারেন?
হ্যাঁ, যদি ভাষা আর অক্ষর জানা থাকে।
চাকরটি ভাবে তারা পড়তে জানে না, তাই সে ওদের বিদায় জানিয়ে চলে যেতে চায়। কিন্তু তাকে বাধা দিয়ে রোমিও বলে, পড়তে জানি, তারপর সে ওই কাগজে লেখা আমন্ত্রিতদের নাম-ঠিকানাগুলো পড়ে দেয়। ভৃত্যটিকে সে জিজ্ঞেস করে, এঁরা সব আসছেন কোথায়?
রাতের ভোজসভায় আমাদের বাড়িতে।
কার বাড়ি?
আমার মনিবের বাড়ি, ভৃত্যটি বলে, না জিজ্ঞেস করতেই বলছি, আমার মনিব হলেন ধনী ক্যাপুলেট। মন্টেগু পরিবারের লোক না হলে আপনারাও চলে আসুন, অন্ততঃ এক পাত্র করে মদ খাওয়াতে পারব।
ভূত্যটি চলে গেলে বেনভোলিন বলে, এই ক্যাপিউলেটের ভোজসভায় তোমার সুন্দরী রোজালিন থাকবে, সেই সঙ্গে ভেরোনার আরও জবরদস্ত সুন্দরীরা। ওখানে চলো আর রোজালিনের মুখের সঙ্গে আমি যাদের দেখাব তাদের মুখের সৌন্দর্যের তুলনা কোরো; তাদের পাশে তোমার ওই রাজহাঁসটিকে কাকের মতো মনে হবে।
আমার চোখ ওই রকম ভুল করে থাকলে সেই চোখের জল আগুনে পরিণত হোক। আমার প্রেমিকার থেকেও সুন্দরী! যে সূর্য সব কিছু দেখছে সেও পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে তার মতো আর একটিকেও দেখেনি।
বেনভোলিও বলে, শোন তুমি তখন কেবল তাকেই দেখেছ, অন্য কোন সুন্দরীর পাশে রেখে দেখনি। আজ আমি তোমাকে সেই ভাবে দেখাব, দেখ কেমন লাগে। রোমিও জবাব দেয়, ঠিক আছে আমি যাব, তবে তোমার সুন্দরীদের দেখার জন্য নয় নিছক আমার আনন্দের জন্যে।
বৃদ্ধা নার্সের কাছে জুলিয়েটের খোঁজ করেন লেডী ক্যাপিউলেট। জুলিয়েট এলে তিনি নার্সের কাছে জানতে চাইলেন সে জুলিয়েটের বয়েস কত হলো বলতে পারে কিনা। বুড়ী নার্স বললে, বিশ্বাস করুন একেবারে ঘণ্টা ধরে ওর বয়েস বলে দিতে পারি।
ওর তো এখনও চৌদ্দ হয়নি, তাই না? জিজ্ঞেস করেন লেডী ক্যাপিউলেট।
না চৌদ্দ হয়নি। আচ্ছা, পয়লা আগষ্টের ফসল কাটার উৎসবের আর কত দেরী?
দিন পনেরো হবে।
তাহলে এই বছর পয়লা আগষ্ট হলে ওর চৌদ্দ হবে। সুশান আর ও এক বয়সী। সুশান তো আর নেই, আমার কপালে ও সইল না। কিন্তু যা বললাম ফসল কাটার উৎসবের দিন ওর চৌদ্দ হবে। আমার স্পষ্ট মনে আছে এগারো বছর আগে যেবার ভুমিকম্প হলো-ওঃ সেদিনের কথা আমি ভুলতে পারব না; আমি তখন পায়রার ঘরের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে রোদ পোয়াচ্ছি, আপনি তখন মান্ডুয়াতে, সেই সময় পায়রার ঘরটা কেঁপে উঠল। সেটা হলো এগারো বছর আগে আর তখন ও সারা বাড়ি ছুটোছুটি করে বেড়াতো। তার আগের দিনই ও পড়ে গিয়ে ভুরুটা ফাটালো। আর আমার স্বামী-ঈশ্বর তার আত্মাকে শাস্তি দিন- মানুষটা হাসিখুশি ছিল, সেই তো গিয়ে ওকে তুললে আর বললে তোর বুদ্ধি হলে তুই মুখ থুবড়ে নয়, পেছন দিকে পড়বি, অমনি দুষ্টুটা কান্না ফেলে বলে কিনা-অ্যা। এক হাজার বছর বাঁচলেও আমি সেদিনের কথা ভুলব না।
লেডী ক্যাপিউলেট বললেন, অনেক হয়েছে, এবার চুপ করবে?
হ্যাঁ ম্যাডাম, নার্স বলে চলে, আমার যখনই মনে পড়ে ও কান্নাটান্না ভুলে বলল 'অ্যা,' তখন না হেসে পারি না। এখনও আমার মনে আছে ওর ভুরুটা পাথরের মতো ফুলে উঠেছিল, বেশ ভালই লেগেছিল তবু স্বামীর কথায় বলে কিনা 'অ্যা'।
জুলিয়েট বললে, দোহাই তোমার এবার থামো।
এই চুপ করলাম। আমি যত বাচ্চাকে দেখাশোনা করেছি তুই ছিলিস তাদের মধ্যে সবচেয়ে ফুটফুটে। এখন তোর বিয়েটা দেখে যেতে পারলে বাঁচি।
সুযোগ পেয়ে লেডী ক্যাপিউলেট বললেন, বিয়ে, হ্যাঁ বিয়ের ব্যাপারেই তোর সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলাম। বলতো মা বিয়ের ব্যাপারে তোর মতটা কি?
আমি এখনও ও সম্পর্কে ভাবিইনি, উত্তর দেয় জুলিয়েট।
তাহলে এখন ভাবো, বললেন লেডী ক্যাপিউলেট, ভেরোনাতে তোর চেয়ে ছোট অনেক গণ্যমান্য পরিবারের মেয়েরা মা হয়ে গেছে, তোমার বয়সে আমিও তোমার মা হয়ে গিয়েছিলাম। শোন্ প্যারিস তোকে পছন্দ করেছে। নার্সটি বলে ওঠে, ম্যাডাম, ও সত্যিকারের পুরুষ মানুষ, ওর স্বভাবচরিত্রে কোন খাদ নেই।
ভেরোনাতে অমন আর একজনও নেই। বললেন লেডী ক্যাপিউলেট।
খুব সত্যি কথা, নার্স সায় দেয়।
লেডী ক্যাপিউলেট আবার বললেন, এখন বলো, ওই ভদ্রলোককে কি তোমার পছন্দ হয়? আজ রাতের ভোজসভায় তাকে দেখবি, তার সুন্দর মুখখানার দিকে লক্ষ্য রাখবি, বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ চেহারা, চোখ দুটি সুন্দর। ভালবাসার মানুষ হিসেবে সত্যিই কাম্য। তবে হ্যাঁ, তার একজন পাত্রী জুটলে ষোলকলা পূর্ণ হয়। তুই সেই অভাবটা পূরণ করতে পারিস। আর তাকে পেলে তোর মর্যদারও এতটুকুও হানি হবে না।
নার্সটি বলে, হানি বলছেন কি ম্যাডাম বরং বাড়বে। এখন অল্প কথায় বল দেখি প্যারিসের সম্পর্কে তোর কি মত? জিজ্ঞেস করেন জুলিয়েটের মা।
জুলিয়েট উত্তর দেয়, আমি আগে ওকে দেখি পছন্দ হয় কিনা তারপর অন্য কিছু ভাবব।
লেডী ক্যাপিউলেটের খোঁজে আসে জনৈক ভৃত্য। বলে, ম্যাডাম, অতিথিরা এসে পড়েছেন,
তাদের খাবারও দেওয়া হয়েছে আপনাকে ও দিদিমণিকে ডাকছেন।
লেডী ক্যাপিউলেট বলেন, যাও আমি যাচ্ছি।
রোমিও, মারকুশিও ও বেনভোলিও এবং তাদের বন্ধুবান্ধব আরও কয়েকজন মুখোশ পরে বেরিয়েছে, ক্যাপিউলেটের বাড়ির উদ্দেশ্যে। সঙ্গে কয়েকজন মশালধারীও রয়েছে। সে সময় ইতালিতে উৎসব ও আনন্দানুষ্ঠানের একটা অঙ্গ ছিল মুখোশ পরে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাচ-গান করা। আবার অযাচিতভাবে তাদের বাড়ি যাওয়ায় প্রথাগতভাবে গৃহস্বামীর কাছে ক্ষমা চাইতে হতো যদিও সাধারণতঃ গৃহস্বামী তাঁর বাড়িতে শিল্পীদের এই আগনকে সুনজরেই দেখতেন। তারই সুযোগ নিয়ে ছদ্মবেশে বেরিয়েছে রোমিওর দলবল। রোমিও বন্ধুদের জিজ্ঞেস করে, আমরা অযাচিত ভাবে ক্যাপিউলেটের বাড়ি যাওয়ার জন্যে অজুহাত কি দেব? নাকি ক্ষম-প্রার্থনার ধার ধারব না।
আজকাল ক্ষমা-প্রার্থনার রীতি উঠে গেছে, বলে বেনভোলিও।
রোমিও বললে, আমি কিন্তু নাচটাচের মধ্যে থাকব না। আমি স্রেফ মশাল ধরব।
উঁহু, সেটি হচ্ছে না, মারকুশিও বলে, তুমি হচ্ছো প্রেমিক মানুষ, প্রেমের ডানায় ভর করে তুমি তো অন্যদের চেয়ে অনেক উর্ধে বিচরণ করবে। -না ভাই, এখন নিজের জ্বালায় মরছি।
মরার জন্যে তুমি প্রেমের মতো কোমল জিনিষকে বেছে নিলে?
প্রেম কোমল জিনিষ? বললে রোমিও, বরং ওটা বড় রুক্ষ, বড় নিষ্ঠুর বড় ভয়ঙ্কর ও কাঁটার মতো
হৃদয়ে বেঁধে।
মারকুশিও বললে, প্রেম যদি তোমার সঙ্গে রুক্ষ আচরণ করে থাকে তুমিও তাকে পাত্তা দিও না, প্রেম যদি তোমার মনে কাঁটা ফুটিয়ে থাকে তুমিও তার ওপরে উঠে তাকে পরাজিত করো।
আর তুমি বাড়ির ভেতরে গেলেই সবাই তোমাকে নাচতে বাধ্য করবে বেনভোলিও বললে।
-না, না, আমি বরং আলো ধরব আর যা হবে দেখব।
থামো, মৃদু ধমক দেয় মারকুশিও, আমরা তোমাকে তোমার দুঃখ থেকে টেনে তুলব। নাচ-গানের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে মন থেকে দুঃখকে দূর করে দাও।
রোমিও উদাস ভাবে বলে, আমোদ-আহাদের টানে আমি যেন ঠিক সাড়া দিতে পারছি না।
কথা বলে আমরা মিথ্যে সময় নষ্ট করছি, আমাদের জন্যে খাবার-দাবার থাকলে হয়, বলল
বেনভোলিও।
কি জানি আমার বরং মনে হচ্ছে আমরা তাড়াতাড়ি এক অনিশ্চিত পরিণতির দিকে এগোচ্ছি আর এই অশুভ যাত্রার শুরু আজকে রাতে আমাদের এই অভিযানে, রোমিওর কথা যেন ভবিষ্যদ্বাণীর মতো মনে হয়।
ক্যাপিউলেটের বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার পর্ব শেষ, ক্যাপিউলেট মেয়েদের দিকে তাকিয়ে খোশ মেজাজে বললেন, তোমাদের মধ্যে যাদের খাওয়াদাওয়াটা বেশী হয়ে যায়নি তারা এই মুখোশধারীদের নাচে যোগ দাও। আপত্তি হবে না নিশ্চয়? আমিও এক সময় মুখোশ পরে নাচতে যেতাম আর সুন্দরীদের কানে কানে ফিস ফস করে কথা বলার আনন্দও উপভোগ করতাম। কিন্তু হায়, সে সব দিন চলে গেছে। বাজনদাররা, তোমরা বাজাও। অনুচরদের বলেন, আরো বেশী করে আলো জ্বালিয়ে দাও, আসর জমে উঠুন। আগন্তুক নাচিয়ে দলের নাচ দেখে খুশি ক্যাপিউলেট বললেন, হ্যাঁ, ওরা ভালই নাচছে, স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা কত বছর হলো
তুমি আমি একসঙ্গে নেচেছি? সে আজ তিরিশ বছর হয়ে গেল, বললেন লেডী ক্যাপিউলেট।
না, না, অত দিন নয়, অত দিন নয়, ওই তো লুসেনিও'র বিয়েতে-সে বোধ হয় বছর পঁচিশ হলো।
আরও বেশী। ওর ছেলের বয়সেই তো এখন তিরিশ হলো।
কি বলছ। স্ত্রীর কথা স্বীকার করতে রাজি নন ক্যাপিলেট, দু'বছর আগেও তো অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল!
দর্শকের ভূমিকায় থেকে রোমিওর নজরে পড়ে, নৃত্যরতা। এক সুন্দরীকে। একটি ভৃত্যকে জিজ্ঞেক করে, ঐ সৈন্যটির হাত ধরে নাচছে যে মেয়েটি ও কে?
আমি জানি না স্যার, ভৃত্য জবাব দেয়। মেয়েটির দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে রোমিও, তারপর বিষ্ময়ের সঙ্গে বলে, এত রূপ। ও যে উজ্জ্বল বহ্নিশিখার চেয়েও উজ্জ্বল, রাতের অন্ধকারে ও যে এক খণ্ড হীরে। মনে হচ্ছে এই রূপ সাজিয়ে রেখে দিই। ও যেন পৃথিবীর নারী নয়, ও যেন কাকের পাশে বরফ-সাদা একটা পায়রা! ওর একটুখানি ছোঁয়ায় আমার হাত ধন্য হয়ে যাবে।
রোমিওর গলা শুনতে পেল টাইবল্ট, বললে, মন্টেগু পরিবারের গলা বলে মনে হচ্ছে। তারপরেই সে এক অনুচরকে হুকুম দেয় তার তরোয়ালটা আনতে, বলে ছদ্মবেশে আমাদের উৎসব নিয়ে মজা করতে এসেছে। পরিবারের সম্মানে ওকে হত্যা করলে আমার এতটুকুও অপরাধ হবে না।
ক্যাপিউলেট এসে ভাইপোর মুখের চেহারা দেখে বললেন, কি হলো, তুমি যেন রেগে আছ মনে হচ্ছে!
টাইবল্ট বললে, কাকা, ওই লোকটা মন্টেগু পরিবারের, আমাদের শত্রু, নিশ্চয় খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে এই ভোজসভায় এসেছে।
রোমিও মনে হচ্ছে না? জিজ্ঞেস করলেন ক্যাপিউলেট। হ্যাঁ, সেই শয়তানটা।
ঠিক আছে টাইবল্ট, শান্ত হও ভাইপোকে বোঝাবার চেষ্টা করেন ক্যাপিউলেট, ওকে ছেড়ে দাও; ওর চেহারায় একটা ভদ্রলোকের ছাপ আছে, ভেরোনার মানুষ ওকে নিয়ে গর্ব করে, খুবই গুণী আর ভাল ছেলে। না, না, আমি কোন কারণেই তার প্রতি অভদ্র হতে পারব না। তুমি বরং, এমন ভুরু কুঁচকে থেকো না। এ রকম একটা ভোজসভার সঙ্গে মানায় না।
আমি ওকে সহ্য করব না, টাইবল্ট রাগে গর গর করে।
বিরক্ত ক্যাপিউলেট বললেন, সহ্য যে করতেই হবে। আমি বলছি ও এখানে থাকবে। ব্যাস। তুমি কি আমার অতিথিদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি বাঁধাতে চাও?
কাকা, তুমি কেন বুঝতে পারছ না ওই লোকটার উপস্থিতি আমাদের পরিবারের পক্ষে একটা লজ্জাজনক ব্যাপার, বলে টাইবল্ট।
ছাড়, ছাড়, সত্যিই কি তাই? রেগে ওঠেন ক্যাপিউলেট, আমি জানি কোনটা কি। তুমি চুপ করো, নইলে আমি চুপ করিয়ে দেবো।
ঠিক আছে, আমি এখন কিছু বলছি না, এখন ওর আসাটা মিস্টি লাগলেও পরে তা তেতো বড়িতে পরিণত হবে, রাগে গর গর করতে করতে চলে যায় টাইবল্ট নিভৃতে পেয়ে সেই সুন্দরী জুলিয়েটকে রোমিও বলে, আমার এই হীন হাত দুটো কি তোমায় স্পর্শ করে ধন্য হতে পারে? আর আমার এই ঠোঁট দু'জন লাজুক তীর্থযাত্রীর মতো তোমায় চুম্বন করতে চায়।
সৌজন্যপ্রিয় তীর্থযাত্রী, বলে জুলিয়েট, আপনি বোধহয় আপনার হাতের ওপর সুবিচার করছেন
না। সাধু ব্যক্তিদের হাতে হাত ঠেকিয়েও তীর্থযাত্রীরা চুম্বনের স্বাদ গ্রহণ করে।
তা কেন? সাধুদের কি ঠোঁট নেই? প্রশ্ন করে রোমিও।
জুলিয়েট উত্তর দেয়, আছে সে ঠোঁট কেবল প্রার্থনার জন্যে।
তাহলে সাধ্বী নারী, হাত যা করে আমার ঠোঁটকে তাই করতে অনুমতি দাও। প্রার্থনার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে রহস্য করে বলে জুলিয়েট।
তাহলে আমার প্রার্থনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত থাকো নীরব নিশ্চল, জুলিয়েটকে চুম্বন করে রোমিও, তারপর বলে, তোমার ঠোঁটের স্পর্শে আমি আজ পাপ-মুক্ত হলাম।
এবার তাহলে আমার ঠোঁট থেকে সেই পাপ ফেরত নাও, বলে জুলিয়েট।
রোমিও আবার তাকে চুম্বন করে। জুলিয়েট বলে, তোমার চুম্বন বড়ই কেতাবী।
নার্স এসে জুলিয়েটকে বলে তার মা তাকে ডাকছেন। রোমিও জানতে চাইল, কে জুলিয়েটের মা। নার্স জানাল তিনি এই ভোজসভার গৃহকর্ত্রী এবং তিনি একজন ভাল ও জ্ঞানী-গুণী মহিলা। নার্স বললে, আমি তার মেয়েকে প্রতিপালন করেছি, আমি বলতে পারি যে তার পাণিগ্রহণ করবে তাকে নিশ্চয় অর্থবান হতে হবে।
জুলিয়েটের মা ক্যাপিউলেটের স্ত্রী। রোমিও ভাবে, সর্বনাশ। এখন তো শত্রুর হাতেই আমার জীবন। বেনভোলিও পরামর্শ দেয়, খেলা সাঙ্গ করে কেটে পড়ো।
সবাই চলে যাবার সময় জুলিয়েট একজনকে দেখিয়ে নার্সকে জিজ্ঞেস করল, ও-কে? ওই যে ভদ্রলোক-
ও বৃদ্ধ টিবেরোর ছেলে ও উত্তরাধিকারী।
আর ওই লোকটা যে সবে দরজার বাইরে গেল?
বোধহয় পেত্রুচিও।
আর যে ছেলেটা আজ নাচল না ও-কে?
আমি জানি না।
তাহলে জেনে এস। ও বিবাহিত হলে আমার মরণ হলেই ভাল, বলে জুলিয়েট। ওর নাম রোমিও, আসল কথাটা ভাঙ্গল নার্স, ও আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু মন্টেগুর ছেলে।
হবে। তাহলে ওই ঘৃণা থেকেই আমার মধ্যে ভালবাসা উন্মেষ হয়েছে। ওই শত্রুটিকে আমায় ভালবাসতেজু লিয়েটের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে নার্সটি বলে ওঠে, হায় কপাল! এ কি হলো!
নোট: প্রিয় পাঠক, উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের লেখা রোমিও এ্যান্ড জুলিয়েট অসাধারণ একটি বাংলা ভাষায় অনুবাদকৃত প্রেমের নাটকের ১ম পর্ব আজ শেষ করলাম। গল্প প্রেমিকদের সারা পেলে পরবর্তীতে আবার ২য় পর্ব খুব শীঘ্রই পোস্ট করবো ইনশাআল্লাহ।