স্থানীয় পরিকল্পনা কী? বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা

স্থানীয় পরিকল্পনা কি? এর তাৎপর্য বর্ণনা কর।

অথবা, 

স্থানীয় পরিকল্পনা বলতে কী বুঝ? এর প্রয়োজনীয়তাগুলো ব্যাখ্যা কর।

অথবা, 

স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা কাকে বলে? স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার গুরুত্ব বর্ণনা কর।


ভূমিকাঃ স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করে গড়ে ওঠে। স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসাধন ও সমাজ পরিবর্তনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিরসনের জন্য স্থানীয় সরকার ও তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে থাকে। স্থানীয় পরিকল্পনা একটি গতিশীল ও চলমান প্রক্রিয়া হলেও এর মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সামাজিক উন্নয়নকেই নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। স্থানীয় পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা থেকে আলাদা ও বিপরীত। তবে স্থানীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমাজ বা আঞ্চলিক কাঠামোর উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি একটি জনকল্যাণমূলক পরিবর্তনকে নিশ্চিত করে।

স্থানীয় পরিকল্পনা কী? বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা
স্থানীয় পরিকল্পনা কী? বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা

স্থানীয় পরিকল্পনার সংজ্ঞাঃ 

কোনো একটি নির্দিষ্ট সমাজ বা অঞ্চলভিত্তিক ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন সাধনের জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতিমালার উপর ভিত্তি করে কার্য-সম্পাদন করা হয় তাকে স্থানীয় পরিকল্পনা বলে। স্থানীয় পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট Bottom Up পদ্ধতির মাধ্যমে ধাবিত হয়ে থাকে। অন্যদিকে Top Down পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় পরিকল্পনায়ও তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় পরিকল্পনা স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নের অন্যতম চাবিকাঠি।

সুতরাং, স্থানীয় পরিকল্পনা বলতে এমন এক পরিকল্পনা বুঝায়, যে পরিকল্পনায় জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে, স্থানীয় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় এবং প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করা হয়।

স্থানীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তাঃ

স্থানীয় পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট সমাজ কাঠামোর অথবা আঞ্চলিক ক্ষমতা বাস্তবায়নের অভ্যন্তরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্ম সম্পাদনের মধ্য দিয়ে কাজ করে থাকে। স্থানীয় সরকারের পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ:

১. অর্থনৈতিক গতিশীলতাঃ স্থানীয় পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের স্থানীয় ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরে গতির সঞ্চার করে। মূলত এর মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ জনগণ ও অর্থনৈতিক শক্তির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিভিন্ন ধরনের অবস্থা ও আকাঙ্ক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করে। বস্তুত, স্থানীয় সমাজ ও ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরীণ সামাজিক বিভিন্ন চলককে একত্রিত করা ও তাদের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে স্থানীয় পরিকল্পনা কাজ করে থাকে। স্থানীয় পরিকল্পনা একটি অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তন আনয়ন করে। তাছাড়া একটি নির্দিষ্ট কর্মপ্রণালির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় পরিকল্পনা কাজ করে থাকে।

২. অংশগ্রহণঃ স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা একটি নির্দিষ্ট উপায়ে যে বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে থাকে তার জন্য সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে থাকে। সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে একটি পরিকল্পনা যা স্থানীয় পর্যায়ে গ্রহণ করা হয় তার সফলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। কেননা, বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা সাধারণ জনগণের জন্যই মূলত গ্রহণ করা হয়ে থাকে। আর এর মাধ্যমে যদি সাধারণ জনগণের ইচ্ছা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব না হয় তবে সেজন্য সে সকল পরিকল্পনা সফল হতে পারবে না। আর এভাবে স্থানীয় পরিকল্পনা জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

৩. কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাঃ স্থানীয় পরিকল্পনা একটি অঞ্চালের অভ্যন্তরীণ সাধারণ জনগণের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধনের জন্য তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে থাকে। সাধারণ জনগণের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে একটি অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। কেননা, যখন কোনো একটি অঞ্চলের অভান্তরীণ জনগোষ্ঠী তাদের কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা লাভ করবে তখনই তারা সেই সমাজের উন্নয়নমূলক নানা পরিকল্পনার সাথে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। একটি সমাজ বা স্থানীয় অঞ্চলে স্থানীয় সরকার তার পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। যেমন- গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প স্থাপন, সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা, গবাদি পশুপালন ইত্যাদি হাতে নিয়ে থাকে।

৪. সম্পদের সঠিক ব্যবহারঃ দেশের প্রতিটি অঞ্চল বিভিন্ন প্রাকৃতিক, সামাজিক অথবা মানব সম্পদে সমৃদ্ধ। এ সকল বিভিন্ন সম্পদ ও তাদের সার্বিক ব্যবহারের মধ্য দিয়ে একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সাধারণ জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধনের জন্য কাজ করে থাকে। বস্তুত, বিভিন্ন উন্নয়ন কাঠামো ও পরিকল্পনা সম্পদের সঠিক ব্যবহার ছাড়া করা সম্ভব নয়। কার্যত, বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে যদি কোনো একটি এলাকার উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব না হয় তবে সে অঞ্চলে কখনোই জনকল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। একটি কার্যকরী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয় সরকার সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করে।

৫. জনসচেতনতা বৃদ্ধিঃ জনগণের মাঝে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প ও তার সম্পর্কে তাদের সচেতনতা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। স্থানীয় সরকার তাদের পরিকল্পনার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কেও সচেতন করে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার সফলতার জন্য জনগণের সচেতন দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারণ ঘটানোর মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা কাজ করে থাকে। স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার প্রতি নানা প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে।

৬. সম্পদের সঠিক বণ্টনঃ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ধরনের অধিকার বা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ বণ্টনের জন্য স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা কাজ করে থাকে। স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা মূলত একটি সমাজের অভ্যন্তরে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, সুযোগ-সুবিধা ও নানা অধিকার-কর্তব্যের সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করে। সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো যে দায়িত্ব পালন করে তার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পরিকল্পনায় জনকল্যাণ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করে থাকে।

৭. জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার অনুধাবনঃ সাধারণ জনগণের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা কিংবা স্থানীয় সরকারের কাছে সাধারণ জনগণের কোনো প্রকার চাওয়া পাওয়া থাকলে সে সম্পর্কে বিভিন্ন জরিপ ও জনমাত যাচাই করার মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্প্রসারণ ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে থাকে। জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তাদের নানা ইচ্ছা-অনিচ্ছার ও চাহিদার উপর নির্ভর করে। আর এ সকল বিভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা পূরণ করার মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা সাধারণ জনগণের জন্য উন্নয়ন ও কল্যাণ ত্বরান্বিত করে এবং এর মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

৮. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাঃ অর্থনীতি যদি স্থিতিশীল হয় তবে এর মাধ্যমে যেকোনো ধরনের উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব। স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ জনগণের জন্য কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য একটি সমাজ কাঠামোর অভ্যন্তরীণ নানা অর্থনৈতিক অবস্থাকে, যেমন- কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সমবায় ও বেকারত্ব দূর করার মধ্য দিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রগতিকে নিশ্চিত করে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন মূলত একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির চাবিকাঠি। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক অবস্থাকে স্থিতিশীল রাখতে হলে সাধারণ জনগণের জন্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু অর্থনৈতিক পরিমণ্ডল তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

৯. জনগণের দক্ষতা নিশ্চিতকরণঃ সাধারণ জনগণকে আরও বেশি দক্ষ ও কর্মমুখী করার মধ্য দিয়ে উন্নত মানব সম্পদ প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে জনগণের আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক উন্নয়ন সাধনের জন্য স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। স্থানীয় সরকারে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন দক্ষ জনশক্তি প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনেতিক পরিকল্পনার অভ্যন্তরে উন্নত মানব সম্পদের অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এর মধ্য দিয়ে একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও সার্বিক উন্নয়নে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা কাজ করে থাকে।

১০. জীবনযাত্রার মানোন্নয়নঃ সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার মান একটি নির্দিষ্ট স্থানীয় অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তবে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য নানা রকম আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে থাকে। জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব হলে তারা আরও বেশি উন্নয়ন কাঠামোর অভ্যন্তরে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে এবং সেই সাথে নানা উন্নয়ন পরিকল্পনাকে আরও বেশি অনুধাবন করতে পারবে। একটি স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার মাধ্যমে সমাজের অগ্রগতিকে প্রভাবিত করা যায়।

১১. অবকাঠামোগত উন্নয়নঃ স্থানীয় পর্যায়ে নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন সূচনা করার জন্য স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নানা অবকাঠামোর উন্নয়ন সাধনের জন্য বিভিন্ন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান তাদের পরিকল্পনার বাস্তবায়নের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয়ে সহযোগিতা ও প্রভাবিত করে থাকে। স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য সামাজিক অবকাঠামোর উন্নয়ন সাধনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। অবকাঠামোগত উন্নয়ন একটি নির্দিষ্ট এলাকার অভ্যন্তরীণ সাধারণ জনগণের সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি করার মধ্য দিয়ে একটি উন্নত সমাজ কাঠামো গড়ে তোলে।

১২. বিকেন্দ্রীকরণঃ বর্তমান আধুনিক যুগে শাসন ও ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। শাসন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ নানা কর্মসূচির বাস্তবমুখি বাস্তবায়ন ও জনকল্যাণমুখিতা নিশ্চিত করে থাকে। শাসন বিকেন্দ্রীকরণ করা সম্ভব হলে তার মাধ্যমে সাধারণ জনগণ তাদের বিভিন্ন অধিকার ও কর্তব্য আরও সুচারুরূপে পালন করতে পারবে। তাছাড়া শাসন বিকেন্দ্রীকরণের মধ্য দিয়ে একটি সমাজের অভান্তরে স্থানীয় পরিকল্পনার জনকল্যাণমুখিতা বৃদ্ধি পায়।

১৩. জনসেবা নিশ্চিতকরণঃ জনগণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সেবা, যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান প্রভৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক অধিকার যেমন- ভোট দান, তথ্য জানার অধিকার প্রভৃতির নিশ্চয়তা স্থানীয় সরকার পরিকল্পনার মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। বস্তুত, কোনো একটি ক্ষমতা কাঠামো স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে। এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা একটি সমাজ বা ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরীণ মৌলিক জনসেবা নিশ্চিত করে যার মাধ্যমে উন্নয়নে অগ্রগামী হয়।

উপসংহারঃ স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা জনগণের কল্যাণ সাধনের নিমিত্তে যে সকল কার্যাবলি সম্পাদন করে তার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। স্থানীয় সরকার পরিকল্পনা জনগণের জন্য মূলত কাজ করে এবং এ ধরনের কাজ করার মধ্য দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতামতের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় পরিকল্পনা আবর্তিত হয়। জনগণের কল্যাণ সাধন ও তার নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য স্থানীয় পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। স্থানীয় পরিকল্পনা একটি সমাজ কাঠামোর সার্বিক উন্নয়নকে নিশ্চিত করে। তাছাড়া সমাজ পরিবর্তন ও সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিরসনের জন্য স্থানীয় পরিকল্পনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।


Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url