সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর: মাস্টার্স ফাইনাল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান (শাসনের সমস্যাবলি)

প্রশ্নঃ রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সংজ্ঞা দাও?

ভূমিকা: 

ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ অনুসারে গণতান্ত্রিক সরকারসমূহকে মন্ত্রিপরিষদ ও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এই দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ভিত্তিতে পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে সংসদীয় সরকার বলে। আর শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে এক প্রকার ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার।

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সংজ্ঞা

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার বলতে সেই সরকারকে বুঝায় যেখানে শাসন বিভাগের ও প্রশাসনের চরম ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব একজন ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত থাকে। তিনি একাধারে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। তিনি আইনসভার সদস্য নন এবং আইনসভার কাছে তার কোনো দায়দায়িত্ব নেই। রাষ্ট্রপতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হন। তার কার্যকাল সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট থাকে। সংবিধান লঙ্গন, দেশদ্রোহিতা, উৎকোচ গ্রহণ ইত্যাদি কারণে তাকে পদচ্যুত করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে?
গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর: শাসনের সমস্যাবলি বই থেকে

প্রামাণ্য সংজ্ঞা:

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো।

১. গিলক্রিস্ট (Gelchrist)-এর ভাষায়, "রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার হলো ঐ সরকার ব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত, রাষ্ট্রপতি তার কাজের জন্য আইন পরিষদের প্রভাব মুক্ত।"

২. অধ্যাপক গার্নার মতে, "রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার হচ্ছে সেই ধরনের শাসনব্যবস্থা যেখানে প্রধান নির্বাহী (রাষ্ট্রপ্রধান ও তার মন্ত্রিসহ) তার বা তাদের কার্যকালের দিক থেকে এবং তার বা তাদের রাজনৈতিক নীতিমালার জন্য সাংবিধানিকভাবে আইন সভার নিয়ন্ত্রণ থেকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ এবং এর জন্য কারো নিকট দায়ী ও নয়।"

৩. অধ্যাপক ওয়াল্টার বেজহট (Walter Bagehot) বলেছেন, "আইন ও শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতার স্বাধীনতা যেমন রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের একটি সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য তেমনি সামঞ্জস্য বিধান এবং একত্রীকরণ হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারের নীতি।"

৪. মহাপাত্র (Mahapatra)-এর ভাষায়, "রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার হলো ঐ শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগ পরস্পর পৃথক থেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব সম্পাদন করে।"

উপসংহারঃ

সুতরাং উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা বলতে শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত সরকার ব্যবস্থাকে বুঝায়। রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থায় শাসন-বিভাগ ও আইন বিভাগ পরস্পর পৃথক থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পাদন করে। এই শাসনব্যবস্থায় শাসন বিভাগের শীর্ষে থাকেন একজন রাষ্ট্রপতি।


প্রশ্নঃ রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর?

ভূমিকাঃ ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগ অনুসারে গণতান্ত্রিক সরকারসমূহকে মন্ত্রিপরিষদ ও রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এই দুই শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ভিত্তিতে পরিচালিত শাসন ব্যবস্থাকে সংসদীয় সরকার বলে। আর শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে এক প্রকার ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রয়োগের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার।

রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য

রাষ্ট্রপতি সরকার ব্যবস্থায় যে সকল বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

১. বিচার বিভাগের প্রাধান্য: রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় বিচার বিভাগের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। এক বিভাগ অন্য কোনো বিভাগের কার্যক্রমের উপর হস্তক্ষেপ করল কিনা বিচার বিভাগ তা লক্ষ করতে পারে।

২. রাষ্ট্রপতি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী: রাষ্ট্রপতি সরকার ব্যবস্থার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের চরম কর্তৃত্ব রাষ্ট্রপতির হাতেই ন্যস্ত তাকে। রাষ্ট্রপতিই তত্ত্বগতভাবে এবং বাস্তবে প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী।

৩. রাষ্ট্রপতির শাসনকাল: রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি জনগণের ভোটে সুনির্দিষ্ট কার্যকালের জন্য নির্বাচিত হন। এ কার্যকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায় না। তিনি শারীরিক কারণে পদত্যাগ করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি তার কৃতকর্মের জন্য জনগণের কাছেই দায়ী থাকেন।

৪. সংবিধানের প্রাধান্য: রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য পরিলক্ষিত হয়। এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির সকল ক্ষমতার উৎস হলো সংবিধান। সংসদ বা মন্ত্রিপরিষদ রাষ্ট্রপতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। 

৫. আইনসভার প্রাধান্য: এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় আইনসভা আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে অন্যন্য ক্ষমতার অধিকারী। আইনসভা বিল পাস করে দিলে রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করে থাকেন। এতে মন্ত্রিপরিষদের আলাদা প্রভাব পরিলক্ষিত হয় না।

৬. দায়িত্বশীলতা: জনগণের নিকট দায়িত্বশীলতা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক। এ শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি জনগণ কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি কার্যত জনগণের নিকট দায়ি থাকেন।

উপসংহার: উপরিউক্ত আলোচনার সার্বিক মূল্যায়ন শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসনব্যবস্থায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান। এই শাসন ব্যবস্থার প্রধান ভিত্তি হলো রাষ্ট্রপতি। তিনিই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। বাকিরা তার আজ্ঞাধীন। বর্তমান বিশ্বে এই শাসনব্যবস্থা বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান রয়েছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত রাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার খুব বাস্তবসম্মত এবং উপযোগী।


প্রশ্নঃ এককেন্দ্রিক সরকার বলতে কি বুঝ?

ভূমিকাঃ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ ক্ষমতা বণ্টনের ভিত্তিতে সরকারকে এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় এ দু'ভাগে বিভক্ত করেছেন। এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সারাদেশে একটি মাত্র সরকার প্রতিষ্ঠিত থাকে, সরকারের সকল ক্ষমতা এই কেন্দ্রীয় সরকার বা জাতীয় সরকারই নিয়ন্ত্রণ করে। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য সমগ্রদেশে এক বা একাধিক আঞ্চলিক সরকার বা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব থাকলেও সেগুলোর স্বতন্ত্র কোনো অস্তিত্ব থাকে না। কেন্দ্রীয় সরকারই আইনের মাধ্যমে আঞ্চলিক সরকারগুলোকে সৃষ্টি করে এবং শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে নির্দিষ্ট দায়িত্ব অর্পণ করে।

এককেন্দ্রিক সরকারের সংজ্ঞা:

সাধারণ অর্থে, যে শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের মাধ্যমে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে ন্যস্ত থাকে এবং কেন্দ্র থেকে সকল ক্ষমতা পরিচালিত হয় তাকে এককেন্দ্রিক সরকার বলে।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা:

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী তাদের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে এককেন্দ্রিক সরকারের সংজ্ঞা প্রদানের চেষ্টা করেছেন। নিয়ে তাদের দেওয়া কতিপয় উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো।

১. অধ্যাপক গার্নার (Garner)-এর মতে, "যেখানে সকল ক্ষমতা শাসনতন্ত্রের মাধ্যমে একটি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নাস্ত করা হয় এবং স্থানীয় সরকারসমূহের ক্ষমতা, স্বাতন্ত্র্য এমনকি অস্তিত্বও ঐ কেন্দ্রীয় সরকারের উপরই নির্ভরশীল, তাকে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা বলে।"

২. অধ্যাপক ডাইসি (Dicy) -এর মতে, "এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা হলো একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা কর্তৃক চরম আইনগত ক্ষমতার স্বাভাবিক ব্যবহার।" (Unitarism is the habitual exercise of supreme legislative authority by one central power)

৩. অধ্যাপক সি. এফ. স্ট্রং (C. F Strong) বলেছেন, "যে শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনসভা সংবিধানের মাধ্যমে অপ্রতিহত ক্ষমতার অধিকারী তাকে এককেন্দ্রিক সরকার বলা হয়।"

উপসংহারঃ

সুতরাং যে শাসনব্যবস্থায় শাসন ও আইন বিষয়ক সকল ক্ষমতা শাসনতান্ত্রিকভাবে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত থাকে তাই এককেন্দ্রিক সরকার। এককেন্দ্রিক সরকারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন প্রভৃতি।


প্রশ্নঃ এককেন্দ্রিক সরকারের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর?

ভূমিকাঃ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদগণ ক্ষমতা বণ্টনের ভিত্তিতে সরকারকে এককেন্দ্রিক ও যুক্তরাষ্ট্রীয় এ দু'ভাগে বিভক্ত করেছেন। এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থায় সারাদেশে একটি মাত্র সরকার প্রতিষ্ঠিত থাকে, সরকারের সকল ক্ষমতা এই কেন্দ্রীয় সরকার বা জাতীয় সরকারই নিয়ন্ত্রণ করে। শাসনকার্যের সুবিধার জন্য সমগ্রদেশে এক বা একাধিক আঞ্চলিক সরকার বা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব থাকলেও সেগুলোর স্বতন্ত্র কোনো অস্তিত্ব থাকে না।

এককেন্দ্রিক সরকারের বৈশিষ্ট্যঃ

এককেন্দ্রিক সরকার বর্তমানে একটি সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্যভিত্তিক শাসনব্যবস্থা। এককেন্দ্রিক সরকারের বৈশিষ্ট্যাবলি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

১. কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাধান্যঃ

এককেন্দ্রিক সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাধান্য। এ ধরনের শাসনব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সকল ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। সর্বক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারই হলো প্রধান।

২. সুপরিবর্তনীয় সংবিধানঃ

এককেন্দ্রিক সরকারের সংবিধান সাধারণত নমনীয় প্রকৃতির হয়। এ সংবিধান সাধারণ বিধি-বিধান প্রণয়নের জন্য সহজে পরিবর্তনযোগ্য। সংবিধানের এ পরিবর্তনের জন্য বিশেষ কোনো প্রক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

৩. কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বভৌমত্বঃ

এককেন্দ্রিক সরকারে সার্বভৌমিকতার অবস্থান সম্পর্কে বিরোধ বা বিতর্কের কোনো সম্ভাবনা থাকে না। আইনগত দিক থেকে কেন্দ্রীয় সরকারই সার্বভৌম। তার কোনো প্রতিদ্বদ্ধি নেই।

৪. নমনীয়তাঃ

এককেন্দ্রিক সরকার এক বিশেষ নমনীয় সরকার। এ সরকারের শাসনব্যবস্থায় নমনীয় মনোভাব প্রদর্শিত হয়। এ ধরনের শাসনব্যবস্থা বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

৫. ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের জন্য বিশেষ উপযোগিঃ

এককেন্দ্রিক সরকার আয়তনে ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলোর জন্য বিশেষ উপযোগী ব্যবস্থা। ক্ষুদ্রায়তনের জন্য এ সরকারগুলোর জন্য আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টনের প্রয়োজন পড়ে না।

উপসংহারঃ

পরিশেষে বলা যায়, সুদৃঢ় ঐক্য ও কেন্দ্রীয় প্রবণতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সরকারই হলো এককেন্দ্রিক সরকার। সাংবিধানিক বিধিবদ্ধ দলিল অনুযায়ীই এ সরকারের হাতে রাষ্ট্রীয় চরম ক্ষমতা ন্যস্ত। কেন্দ্রীয় সরকারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় সমগ্র রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্র।


প্রশ্নঃ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার কাকে বলে?

ভূমিকাঃ 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা হলো সর্বাধুনিক সরকার ব্যবস্থা। ক্ষমতা বণ্টনের ভিত্তিতে সরকারের এই শ্রেণীবিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দু'ধরনের সরকার থাকে। একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যটি প্রাদেশিক বা অঞ্চলিক সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র দেশের সাধারণ স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করে। আর আঞ্চলিক সরকারগুলোর উপর আঞ্চলিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ক শাসনকার্য পরিচালনার দায়-দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে।

শাব্দিক অর্থে যুক্তরাষ্ট্র: 

ইংরেজি "Federation শব্দ থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের উৎপত্তি। ফেডারেশন শব্দটি ল্যাটিন 'Feodus' হতে উদ্ভূত হয়েছে। 'Feodus' অর্থ সন্ধি বা মিলন। সুতরাং শব্দগত অর্থে ফেডারেশন সরকার বা যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বলতে আমরা সেই প্রকার সরকারকে বুঝি যা কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র কর্তৃক গঠিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সংজ্ঞাঃ

যখন দুই বা ততোধিক প্রদেশ নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মিলিত হয়ে নিজস্ব সত্তা বজায় রেখে জাতীয় সরকার গঠন করে তখনই তাকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার বলা হয়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখকগণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের দেওয়া কতিপয় উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো-

  • অক্সফোর্ডের অধ্যাপক কে. সি. হইয়ার (K. C. Wheare) বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সরকারি ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকার এবং দেশের অঞ্চলসমূহের সরকারগুলোর মধ্যে এমন ভাবে বণ্টন করা হয় যাতে উভয় ধরনের সরকার নিজ নিজ ক্ষেত্রে আইনগতভাবে স্বাধীন থাকতে পারে।"
  • ফাইনার (Finer)-এর মতে, "যুক্তরাষ্ট্র তাকেই বলে যে ব্যবস্থায় কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার কিছু অংশ আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ন্যস্ত হয় এবং অন্যান্য অংশ ঐসব আঞ্চলিক ক্ষেত্রের সমন্বয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় সংস্থায় ন্যস্ত থাকে।"
  • অধ্যাপক ডাইসি (Diecy) যথার্থ বলেছেন, "যুক্তরাষ্ট্র হলো এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা যার উদ্দেশ্য হলো জাতীয় ঐক্য ও শক্তির সঙ্গে অঙ্গরাজ্যের অধিকারসমূহের সমন্বয় সাধন। এ হলো ঐক্য ছাড়াই মিলন।"
  • রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বার্জেস-এর মতে, "যুক্তরাষ্ট্র হলো এমন এক শাসন ব্যবস্থা যেখানে একটি সাধারণ সরকার ও কতকগুলো আঞ্চলিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা এমনভাবে বণ্টন করা হয় যে, তারা প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে এবং প্রশাসনিক প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে জনগণকে শাসন করে।"
  • অধ্যাপক কোরি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার হলো ঐ শাসন ব্যবস্থা যেখানে দ্বৈত সরকার বিধান করা হয়, যার উদ্দেশ্য হলো বিধিতত্ত্বের সাথে ঐক্যের সমন্বয় সাধন করা।"
  • ঐতিহাসিক ফ্রিম্যান বলেন, "পূর্ণরূপ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্বন্ধ নির্ণয়ের সময় একটি রাষ্ট্র বলে মনে হয়। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে এটি বহু রাষ্ট্রের মতই।"

উপসংহারঃ

উপরিউক্ত সংজ্ঞাসমূহের আলোকে আমরা বলতে পারি যে, যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার এমন একটি ব্যবস্থা যা কয়েকটি রাষ্ট্র অথবা অঞ্চল বা প্রদেশের সমন্বয়ে গঠিত এবং যার ক্ষমতা কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে সংবিধানের মাধ্যমে বণ্টন করা হয়।

প্রশ্নঃ যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর?

ভূমিকাঃ 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা হলো সর্বাধুনিক সরকার ব্যবস্থা। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় দু'ধরনের সরকার থাকে। একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং অন্যটি প্রাদেশিক বা অঞ্চলিক সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র দেশের সাধারণ স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে শাসনকার্য পরিচালনা করে। আর আঞ্চলিক সরকারগুলোর উপর আঞ্চলিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ক শাসনকার্য পরিচালনার দায়-দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্যসমূহঃ

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারে সংজ্ঞা ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে এর যে সকল বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১. দু'ধরনের সরকার: একটি কেন্দ্রীয় সরকার এবং কতকগুলো আঞ্চলিক সরকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকার সমগ্র দেশের শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত আর আঞ্চলিক সরকারগুলো নিজ নিজ অঞ্চলের শাসনকার্য পরিচালনা করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকার ও আঞ্চলিক সরকারসমূহের সহবস্থান বর্তমান থাকে।

২. ক্ষমতার বণ্টন: আঞ্চলিক ক্ষমতার বণ্টন হলো যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকার এবং অঙ্গরাজ্যগুলির সরকারসমূহের মধ্যে ক্ষমতা সংবিধানের দ্বারা বণ্টিত হয়।

৩. লিখিত সংবিধান: যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো লিখিত সংবিধান। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায় সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণ্ণ জ্ঞাখার জন্য সংবিধান লিখিত হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়।

৪. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান: সংবিধানের নির্দিষ্ট ক্ষমতার বণ্টনব্যবস্থাকে কোনো সরকার যাতে এককভাবে পরিবর্তন করে নিজ নিজ ক্ষমতার সীমা বৃদ্ধি করতে না পারে তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধানের পরিবর্তন পদ্ধতি জটিল। সংবিধান সংশোধনের জন্য উভয় প্রকার সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।

৫. দ্বি-নাগরিকত্ব: দ্বি-নাগরিকত্ব ব্যবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে পরিগণিত করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিক একাধারে সমগ্র দেশের নাগরিক এবং অপর দিকে নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যের নাগরিক।

৬. দু'শ্রেণীর আইন: যুক্তরাষ্ট্রে দুই শ্রেণীর আইন বিদ্যমান থাকে। কেন্দ্রকে প্রদত্ত ক্ষমতার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় আইনসভা আইন প্রণয়ন করে। অপরদিকে রাজ্যকে প্রদত্ত ক্ষমতার ভিত্তিতে রাজ্য আইনসভা আইন প্রণয়ন করে। নাগরিককে উভয় আইনই মান্য করে চলতে হয়।

উপসংহারঃ 

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা নিঃসন্দেহে একটি উত্তম সরকার ব্যবস্থা। এই সরকার ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার মূলত জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি নিয়ে কাজ করে এবং জাতীয় ঐক্য ও আঞ্চলিক বিষয়ের মীমাংসা করে থাকে। আর আঞ্চলিক বিষয়াবলি নিয়ে রাজ্য সরকার কাজ করে। এই শাসনব্যবস্থায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটে এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়।

প্রশ্নঃ সাংবিধানিক সরকার বলতে কি বুঝ?

অথবা, 

নিয়মতান্ত্রিক সরকার কি?

ভূমিকাঃ 

নিয়মতন্ত্র বা সংবিধানতন্ত্র বর্তমান বিশ্বের একটি বহুল আলোচিত শব্দ। সংবিধানকে ভিত্তি করে সরকার সংগঠিত ও পরিচালিত হয়। সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার পবিত্র দলিল। সংবিধানবিহীন কোনো রাষ্ট্র থাকতে পারে না। কিন্তু সংবিধান থাকলেই কেবল সরকারকে সাংবিধানিক সরকার বলা যায় না। সাংবিধানিক সরকারে সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকৃত হয় এবং স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

সাংবিধানিক সরকারের সংজ্ঞাঃ

সাধারণভাবে সাংবিধানিক বা নিয়মতান্ত্রিক সরকার বলতে সংবিধানের প্রতি অনুগত বা সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত সরকারকে বুঝায়। কিন্তু ব্যাপক অর্থে সাংবিধানিক বা নিয়মতান্ত্রিক সরকার বলতে কোনো রাজনৈতিক সমাজের কর্তৃত্বশালী শাসকগণের উপর কার্যকর এবং নিয়ম; প্রণালিবদ্ধ বাধা-নিষেধ আরোপের ব্যবস্থাকে বুঝায়। অর্থাৎ নিয়মতন্ত্র বা সাংবিধানিক সরকার বলতে স্বেচ্ছাচারী শাসন নয় বরং আইনের শাসন বা সীমাবদ্ধ ক্ষমতা সম্পন্ন সরকারের শাসনকেই বুঝায়।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ

বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখকগণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে সাংবিধানিক সরকারের সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। নিম্নে তাদের দেওয়া কতিপয় উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো।

  • অধ্যাপক কার্ল, জে. ফ্রেডারিক (Karl J. Frederick) বলেন, "ক্ষমতার বিভক্তিকরণ যেকোনো সভ্য সমাজের ভিত্তি, আর এটাই হচ্ছে সাংবিধানিক সরকার বা নিয়মতন্ত্রের প্রকৃত অর্থ। বর্তমানেসাংবিধানিক সরকারকে নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্র বলে গণ্য করা হয়।"
  • অধ্যাপ ডাইসি (Diecy) বলেন, "Constitutional government is a government refers the government in which the powers of the government is distrubted according to the constitution also responsible to the people" 
  • অধ্যাপ কে. সি. হুইয়ার (K. C. Wheare) বলেন, "সাংবিধানিক সরকার কেবল সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সরকার নয়, এ সরকার আইন ও সংবিধানের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত এবং সরকারি ক্ষমতা কার্যকরী করে।"
  • উইলোবি (Willoughby) বলেন, "আইনের অনুগত ও আইনের দ্বারা সীমাবদ্ধ সরকারকে সাংবিধানিক সরকার বলে।"

উপসংহারঃ

সুতরাং উপরিউক্ত সংজ্ঞাগুলোর আলোকে বলা যায় যে, সাংবিধানিক সরকার হলো সংবিধানসম্মত সরকার। এ সরকার সরকারি আইন ও সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত। বর্তমান বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই সাংবিধানিক সরকারের দাবিতে সোচ্চার।

প্রশ্নঃ সাংবিধানিক সরকারের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর?

অথবা, 

নিয়মতান্ত্রিক সরকারের ৫টি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর?

অথবা, 

সাংবিধানিক সরকারের বৈশিষ্ট্য লিখ?

ভূমিকাঃ 

নিয়মতন্ত্র বা সংবিধানতন্ত্র বর্তমান বিশ্বের একটি বহুল আলোচিত শব্দ। সংবিধানকে ভিত্তি করে সরকার সংগঠিত ও পরিচালিত হয়। সংবিধান হলো রাষ্ট্র পরিচালনার পবিত্র দলিল। সংবিধানবিহীন কোনো রাষ্ট্র থাকতে পারে না। কিন্তু সংবিধান থাকলেই কেবল সরকারকে সাংবিধানিক সরকার বলা যায় না। সাংবিধানিক সরকারে সংবিধানের প্রাধান্য স্বীকৃত হয় এবং স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

সাংবিধানিক সরকারের বৈশিষ্ট্য: 

সাংবিধানিক সরকারের নিম্নলিখিত প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ করা যায়।

১. সংবিধানের প্রাধান্য: সাংবিধানিক সরকার সংবিধানের বিধান বা নীতি দ্বারা সীমিত। এতে সংবিধানের প্রাধান্য (Supremacy of constitution) রক্ষিত হয়।

২. দায়িত্বশীলতা: সাংবিধানিক সরকার সর্বদাই জনগণের নিকট দায়িত্বশীল থাকে। অর্থাৎ জনগণের আস্থা-অনাস্থার উপর সরকারের স্থায়িত্ব নির্ভরশীল।

৩. স্থিতিশীল পালনব্যবস্থা: সাংবিধানিক সরকার স্থিতিশীল। এই পদ্ধতিতে সরকার ব্যবস্থায় ঘন ঘন বা খামখেয়ালি যতো পরিবর্তন করা যায় না। ফলে শাসনব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা বিরাজ করে।

৪. ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ: সাংবিধানিক সরকার ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতা ও কার্যাবলি সম্পাদনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে।

৫. বিচার বিভাগের প্রাধান্য: বিচার বিভাগের প্রাধান্য (Supremacy of Judiciary) সাংবিধানিক সরকারের অপর একটি বৈশিষ্ট্য। এই সরকার ব্যবস্থায় বিচার বিভাগ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থেকে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে পারে।

৬. সরকারের স্বাচ্ছন্দ্রতা: সাংবিধানিক সরকারের কার্যাবলিতে স্বাচ্ছতা বজায় থাকে। এই ব্যবস্থায় সরকারের কার্যাবলি প্রকাশ্যেই সম্পাদন করা হয়। সরকারি কার্যাবলি সম্পর্কে জনগণ অবহিত হয়।

৭. সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর: এই সরকার ব্যবস্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।

উপসংহারঃ

পরিশেষে বলা যায় যে, আধুনিক যুগে সাংবিধানিক সরকার সব দেশেই কাম্য হলেও এরূপ সরকারের জন্য অনেক সমস্যা রয়েছে। এদের মধ্যে যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সংকট, সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা, ক্ষমতালোভী সেনাবাহিনীর রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও আদর্শগত বিরোধ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আর এসব সমস্যা মোকাবিলার সামর্থ্যের উপরই সাংবিধানিক সরকারের সাফল্য নির্ভরশীল।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url