প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (মৌখিক পরীক্ষার জন্য সম্ভাব্য প্রশ্ন ও উত্তর)

প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স- এমএসএস-১ম পর্ব (মৌখিক পরীক্ষার জন্য সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর)
রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ 
বিষয় কোড-১৯০১ (প্রথম পত্র)
বিষয়ঃ পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস (আধুনিক যুগ)
অধ্যায়: (ম্যাকিয়া ভেলী, হবস, লক, রুশো, মন্টেঙ্কু)

(অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)
____________________°___________________

প্রিয় পাঠক এবং মাস্টার্স প্রথম পর্বের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মাস্টার্স প্রথম পর্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের, "পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস" "(আধুনিক যুগ) অধ্যায়: (ম্যাকিয়া ভেলী, হবস, লক, রুশো, মন্টেঙ্কু)" এই অধ্যায় থেকে অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে। আমি মনেকরি আপনারা সবাই জানেন যে, মাস্টার্স প্রথম পর্ব পরীক্ষায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস বইয়ের (ক-বিভাগ) থেকে ১০ নম্বরের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বা সাধারন জ্ঞান থাকে। তাই আজ আমি আপনাদের কাছে উক্ত বিষয়ের ম্যাকিয়া ভেলী, হবস, লক, রুশো, মন্টেঙ্কু অধ্যায়ের অতি গুরুত্বপুর্ণ বেশকিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলো তুলে ধরলাম। ভালো ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে আশাকরি আপনারা সবাই মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-

প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স ভাইভা পরীক্ষার সাজেশন। প্রাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস। রাষ্ট্রবিজ্ঞান।
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স ভাইভা পরীক্ষার সাজেশন। প্রাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস। রাষ্ট্রবিজ্ঞান।

(আধুনিক যুগ) অধ্যায়: (ম্যাকিয়া ভেলী, হবস, লক, রুশো, মন্টেঙ্কু)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলি সম্পর্কে

১. কখন থেকে আধুনিক যুগের সূত্রপাত হয়?

উত্তরঃ পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষার্ধে আধুনিক রাজনৈতিক চিন্তাধারার সূচনা হয় বলে ধারণা করা হয়। 

২. আধুনিক যুগের সময় সীমা নির্ধারণ কর?

উত্তরঃ আধুনিক যুগের সময় সীমা হলো ষোড়শ শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত।

৩. আধুনিক যুগের দার্শনিকদের নাম উল্লেখ কর?

উত্তরঃ আধুনিক যুগের প্রখ্যাত ও দার্শনিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ম্যাকিয়া ভেলী, হবস, লক, রুশো ও মন্টেন্ধু প্রমুখ।

৪. আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রথম প্রবক্তা কে?

উত্তরঃ আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রথম প্রবক্তা হলেন ম্যাকিয়া ডেলী।

৫. ম্যাকিয়াভেলী কখন কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ তিনি ১৪৬৯ খ্রিস্টাব্দে ইটালীর অন্তর্গত ফ্লোরেন্স শহরের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।

৬. ম্যাকিয়াভেলীর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ কি কি?

উত্তরঃ দি প্রিন্স এবং ডিসকোর্স উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

৭. উক্ত গ্রন্থ দু'টিতে কি বিষয়ের পরিচয় পাওয়া যায়?

উত্তরঃ ডিসকোর্সের মধ্যে তাঁর সামগ্রিক রাষ্ট্র দর্শনর এর পরিচয় পাওয়া যায় এবং দি প্রিন্সের মধ্যে পাওয়া যায় সরকার পরিচালনা সম্পর্কিত কতকগুলো বাস্তব উপদেশ মালা।

৮. ম্যাকিয়াভেলীর রাজনৈতিক দর্শনের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলীর রাজনৈতিক দর্শনের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের ঐক্য ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা।

৯. ম্যাকিয়াভেলীবাদ কি?

উত্তরঃ গতানুগতিক চিন্তাধারাকে পরিহার করে সমকালীন রাজনৈতিক সমস্যাবলীর সমাধানকল্পে রাজনীতিতে তিনি যে নিজস্ব মতবাদ প্রদান করেন তাহাই 'মেকিয়াভেলীবাদ' নামে পরিচিত।

১০. মানব প্রকৃতি সম্পর্কে ম্যাকিয়াভেলীর ধারণা কি?

উত্তরঃ তাঁর মতে, মানুষ মূলত দুষ্ট, স্বার্থপর, পরশ্রীকাতর, অকৃতজ্ঞ, ধূর্ত, প্রতারক ও লোভী।

১১. নৈতিকতা ও ধর্ম সম্পর্কে ম্যাকিয়াভেলীর ধারণা কি?

উত্তরঃ তিনি রাজনীতি থেকে নৈতিকতাকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক করেন। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও সুষ্ঠু রাজনীতির জন্য ধর্ম ও নৈতিকতাকে তিনি আলাদা করতে চেয়েছিলেন।

১২. তাঁকে আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার জনক বলা হয় কেন?

উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আধুনিক বিশ্লেষণ, রাষ্ট্রীয় ঐক্য অর্জনের পন্থা নির্ধারণ, জাতীয় রাষ্ট্রের দিক নির্দেশ, রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপের স্বতন্ত্র মর্যাদা এবং ধর্ম হতে তাঁর স্বাতন্ত্রীকরণের জন্য তাকে আধুনিক রাষ্ট্র চিন্তার জনক বলা হয়।

১৩. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ম্যাকিয়াভেলীর অবদান কি?

উত্তরঃ ধর্ম ও নৈতিকতাকে রাজনীতি থেকে আলাদা করার মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্র তত্ত্বকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করার পথ সুগম করে দেন। তিনিই জাতীয় রাষ্ট্রের প্রথম প্রবক্তা। আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তা বিকাশের পথ তিনিই সুগম করেন।

১৪. ম্যাকিয়াভেলীর আলোচনার পদ্ধতি কি ছিল?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলী আরোহী পদ্ধতিতে রাষ্ট্রচিন্তার বিশ্লেষণ করেন। তিনি ছিলেন বাস্তব অভিজ্ঞতাবাদী। তাঁর রাষ্ট্র চিন্তার কল্পনা বা আদর্শের কোন স্থান নেই।

১৫. ম্যাকিয়াভেলী কখন মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলী ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

১৬. ম্যাকিয়াভেলীর সময় ইতালি কয় ভাগে বিভক্ত ছিল?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলীর সময় ইতালি পাঁচ ভাগে বিভক্ত ছিল। যথা- ১. পোপের শাসনাধীন ইতালি, ২. রাজতন্ত্র শাসিত নেপলস, ৩. ডিউক শাসিত মিলান, ৪. প্রজাতান্ত্রিক ভেনিস এবং ৫. প্রজাতান্ত্রিক ফ্লোরেন্স।

১৬. ম্যাকিয়াভেলীর সবচেয়ে বড় অবদান কোনটি?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলীর সবচেয়ে বড় অবদান হলো খণ্ড-বিখণ্ড ইতালিকে ঐক্যবদ্ধ করা। 

১৭. ম্যাকিয়াভেলীর মতে শাসকদের প্রধান কাজ কি?

উত্তরঃ ম্যাকিয়াভেলীর মতে, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব এবং স্বাধীনতা রক্ষা করা হলো শাসকদের প্রধান কাজ। ন্যায়-অন্যায়, ভাল-মন্দ, সত্য-অসত্য, সবকিছু এক্ষেত্রে শাসকদের কাছে তুচ্ছ হবে।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ হবস সম্পর্কে

১৮. হবস কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ তিনি ১৫৮৮ সালের ৫ই এপ্রিল ইংল্যাণ্ডের এক ধর্মযাজক বংশে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯. হবস কোন প্রকৃতির লোক ছিলেন?

উত্তরঃ তিনি ছিলেন একজন বস্তুবাদী দার্শনিক।

২০. হবসের কয়েকটি গ্রন্থের নাম বল?

উত্তরঃ (ক) লেভিয়া থান, (খ) ডিসিডি, (গ) ডিকোরপোর, (ঘ) ডিহোমাইন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুনঃ মাস্টার্স শেষ পর্ব- রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রশাসন এবং আইনগত আদেশ

২১. প্রকৃতির রাজ্য সম্পর্কে তাঁর ধারণা কি?

উত্তরঃ হবসের মতে, প্রকৃতির রাজ্য ছিল ভয়াবহ। সেখানে প্রত্যেক ব্যক্তিই তার লোভ-লালসা চরিতার্থ করতে আমরণ সংগ্রামে রত হয়। ফলে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়।

২২. মানব প্রকৃতি সম্পর্কে তাঁর ধারণা কি?

উত্তরঃ তাঁর মতে, প্রত্যেক মানুষ আত্মকেন্দ্রিক এবং প্রত্যেকে নিজের ভাল চায়। ইহা মানব চরিত্রের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য।

২৩. হবসের মতে সার্বভৌম শাসক কে?

উত্তরঃ হবসের মতে, সার্বভৌম শাসক হচ্ছে সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি যার বা যাদের নিকট জনগণ তাদের যাবতীয় অধিকার হস্তান্তর করে দিয়েছে এবং নিজেদের সম্পূর্ণরূপে সার্বভৌম শাসকের নিকট সমর্পণ করেছে।

২৪. হবসের দর্শনে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অবদান কোনটি?

উত্তরঃ আইন সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ধারণা।

২৫. হবস কোন ধরনের দার্শনিক ছিলেন?

উত্তরঃ হবস বস্তুবাদী দার্শনিক ছিলেন।

২৬. হবস কোন ধরনের সরকার উপযোগী মনে করেন?

উত্তরঃ হবস রাজতন্ত্রকে সর্বোত্তম সরকার ব্যবস্থা বলে মনে করেন।

২৭. হবসের সার্বভৌমত্ব কি?

উত্তরঃ হবস চরম সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর সার্বভৌমত্ব হলো চরম, অভিভাজ্য, আইন প্রণয়নকারী শক্তি এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।

২৮. হবসের প্রাকৃতিক আইন কি?

উত্তরঃ হবসের প্রাকৃতিক আইন হলো যুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত এমন একটি আদেশ বা সাধারণ নিয়ম যা মানুষের জীবনের পক্ষে ধ্বংসাত্মক কার্যাবলিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

২৯. হবসের সামাজিক চুক্তি কি?

উত্তরঃ হবসের মতে প্রকৃতির রাজ্যের অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে মানুষ নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি গঠন করে। চুক্তিটি হলো, "আমি অমুক ব্যক্তি বা ব্যক্তি সংস্থাকে ক্ষমতা প্রদান করেছি এই শর্তে নিজকে শাসন করার যাবতীয় ক্ষমতা তার নিকট সমর্পণ করেছি এই শর্তে যে, তুমিও অনুরূপ প্রণালিতে তোমার যাবতীয় কাজের জন্য তাঁকে ক্ষমতা প্রদান কর এবং তোমার নিজেকে শাসন করার অধিকার তার নিকট হস্তান্তর কর।"

৩০. হবসের রাষ্ট্রচিন্তা সমাজের কোন শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য?

উত্তরঃ সমাজের বুর্জোয়া শ্রেণীর জন্য প্রযোজ্য।

৩১. হবস কখন মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ হবস ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ জন লক সম্পর্কে

৩২. জন লক কে ছিলেন?

উত্তরঃ তিনি ছিলেন সামাজিক চুক্তি মতবাদের অন্যতম একজন প্রবক্তা। তাঁকে বৃটেনের সংসদীয় গণতন্ত্রের পুরোধা বলে আখ্যায়িত করা হয়। ১৬৩২ খ্রিঃ তিনি ইংল্যাণ্ডে জন্ম গ্রহণ করেন।

৩৩. লকের বিখ্যাত গ্রন্থের নাম কি?

উত্তরঃ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থের নাম 'অব সিভিল গভর্নমেন্ট।'

৩৪. এই গ্রন্থটিতে তিনি কিসের প্রতি সমর্থন দান করেন?

উত্তরঃ এই গ্রন্থ খানিতে গৌরবময় বিপ্লব এবং পার্লামেন্টারি দলের প্রতি সমর্থন দান করেন।

৩৫. লকের প্রকৃতি রাজ্য কেমন ছিল?

উত্তরঃ লকের প্রকৃতির রাজ্য অরাজনেতিক ছিল, কিন্তু উহা অসামাজিকতা ছিল না। এমতাবস্থায় মানব সমাজে পূর্ণ সাম্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। মানুষ নির্ভয়ে মুক্ত জীবন যাপনে নিয়োজিত ছিল। সকলেই প্রাকৃতিক আইন এবং প্রাকৃতিক ন্যায়-নীতির অধীনস্থ ছিল।

৩৬. লকের মতে, কিভাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তির সৃষ্টি হয়েছে?

উত্তরঃ লকের মতে, মানুষ সম্পত্তির সঙ্গে তার কায়িক পরিশ্রমের সংযোগ সাধন করে ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার সৃষ্টি করেছে।

৩৭.  জন লক সরকারকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন?

উত্তরঃ তিনি সরকারকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথা- রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র এবং গণতন্ত্র।

৩৮. জন লকের কয়েকটি গ্রন্থের নাম বল?

উত্তরঃ জন লক বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। তন্মধ্যে এবং Of Civil Government উল্লেখযোগ্য।

৩৯. জন লক কোন প্রকৃতির দার্শনিক ছিলেন?

উত্তরঃ জন লক উদারনীতিবাদী এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রবক্তা ছিলেন।

৪০. লকের মতে মানব প্রকৃতি কিরূপ?

উত্তরঃ জন লকের মতে মানুষ যুক্তিবাদী। মানুষের মধ্যে লোভ-লালসার উপাদান রয়েছে এবং সকল মানুষ সমান।

আরও পড়ুনঃ সাধারণ জ্ঞান। মাস্টার্স ফাইনাল: শাসনের সমস্যাবলী বই

৪১. লকের মতে রাষ্ট্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী কারা?

উত্তরঃ জন লকের মতে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হলেন জনগণ।

৪২. লকের মতে সম্মতি সরকার কি?

উত্তরঃ সম্মতি বলতে বোঝায় কাউকে কোন কিছু করার অনুমতি প্রদান করা। যে সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে তাকে সম্মতি দ্বারা পরিচালিত সরকার বলে।

৪৩. লকের মতে মানুষের সর্বোত্তম অধিকার কোনটি?

উত্তরঃ লকের মতে মানুষের সর্বোত্তম অধিকার হলো সম্পত্তি ভোগ-দখলের অধিকার।

৪৪. জন লকের মতে কোন্ সরকার সর্বোত্তম?

উত্তরঃ জন লক সাংবিধানিক বা জনগণের সরকারকে সর্বোত্তম সরকার বলেছেন।

৪৫. জন লক কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ জন লক ১৭০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ রুশো সম্পর্কে

৪৬. রুশো কখন, কোথায় জন্ম গ্রহণ করেন?

উত্তরঃ ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন।

৪৭. রুশোর কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম লিখ?

উত্তরঃ তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর মধ্যে- (ক) দি নভেল হেলোসী (খ) দি ইমাইল এবং (গ) সামাজিক চুক্তি অন্যতম।

৪৮. 'মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন, কিন্তু সর্বত্রই সে শৃঙ্খলিত' এটা কার উক্তি এবং এর অর্থ কি?

উত্তরঃ এটা রুশোর উক্তি। এর অর্থ এই যে, মানুষ স্বাধীনভাবে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু জন্মগ্রহণের অব্যবহিত পরেই সে সামাজিক রীতিনীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

৪৯. সভ্যতা যতই উন্নত হয়, ততই অনুন্নত হয়-এই মতবাদটি করে?

উত্তরঃ উক্তিটি রুশোর।

৫০. রুশোর প্রাকৃতিক রাজ্য কেমন ছিল?

উত্তরঃ রুশোর প্রাকৃতিক রাজ্যে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি বিরাজ করত। এতে মানুষ স্বর্গীয় সুখ অনুভব করত। 

৫১. রুশো রাষ্ট্র এবং সরকার বলতে কি বুঝিয়েছেন?

উত্তরঃ রুশো রাষ্ট্র বলতে সামাজিক চুক্তি এবং সার্বভৌম সাধারণ ইচ্ছার মাধ্যমে সৃষ্টি সমগ্র সম্প্রদায়কে বুঝিয়েছেন। আর সরকার বলতে সম্প্রদায় কর্তৃক সার্বভৌম ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীয় নিকট অর্পণ করাকে বুঝিয়েছেন।

৫২. রুশোর সার্বভৌম ক্ষমতা কিরূপ?

উত্তরঃ রুশো সার্বভৌম ক্ষমতাকে একক অবিভাজ্য, স্থায়ী, নিশ্চিত বা সম্ভ্রান্ত, প্রতিনিধিত্বের অযোগ্য, হস্তান্তরের অযোগ্য এবং অসীম বলে বর্ণনা করেছেন।

৫৩. হবস ও রুশোর সার্বভৌমত্বের ধারণার মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ রুশো সমগ্র সম্প্রদায়ের হাতে সার্বভৌম ক্ষমতা অর্পণ করেছেন, কিন্তু হবস একজন বা মুষ্টিমেয় কয়েকজনের হাতে উক্ত ক্ষমতা অর্পণ করেছেন।

৫৪. রুশোর সাধারণ ইচ্ছা কিভাবে সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ রুশো তাঁর সুপ্রসিদ্ধ সামাজিক চুক্তি গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, চুক্তির মাধ্যমে সমাজ সৃষ্টির অব্যবহিত পরে মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তখন মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছা সমগ্র সম্প্রদায়ের ইচ্ছায় পরিণত হয়। আর ইহা হতেই জন্ম নেয় সাধারণ ইচ্ছা।

৫৫. রুশোর রাজনৈতিক চিন্তাধারা পরবর্তীতে কি প্রভাব ফেলে?

উত্তরঃ রুশোর রাজনৈতিক চিন্তাধারা এবং তার লেখনী ফরাসী বিপ্লবকে অনুপ্রাণিত করে এবং ইহা ১৭৭৬ সালের আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের উপরও যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছিল।

৫৬. রুশোর সাধারণ ইচ্ছা কি?

উত্তরঃ রুশোর সাধারণ ইচ্ছার অর্থ হলো জনগণের ইচ্ছা যার দ্বারা জনগণের কল্যাণ সাধিত হয়। তাই রুশোর সাধারণ ইচ্ছা বলতে জনগণের কল্যাণকামী ইচ্ছাকে বুঝিয়েছেন।

৫৭. রুশো সাধারণ ইচ্ছা এবং সকলের ইচ্ছার মধ্যে কিভাবে পার্থক্য করেছেন?

উত্তরঃ যে জনকল্যাণকর ধারণার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে সেটা হলো সাধারণ ইচ্ছা। অপরদিকে যে ধারণায় ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে তাকে সকলের ইচ্ছা বলে। সকলের ইচ্ছায় কোন জনকল্যাণের ধারণা থাকে না।

৫৮. রুশোর রাষ্ট্রচিন্তার মূল উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তরঃ রুশোর রাষ্ট্রচিন্তার মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষা করা। 

৫৯. রুশো কোন প্রকৃতির দার্শনিক?

উত্তরঃ রুশো ছিলেন ভাববাদী দার্শনিক। 

৬০. দাস প্রথা সম্পর্কে রুশোর ধারণা কি?

উত্তরঃ রুশোর মতে দাসত্বের অর্থ হলো কোন ব্যক্তির মনুষ্যত্ব ত্যাগ করা।

আরও পড়ুনঃ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পর্কিত ১০০টি MCQ প্রশ্ন ও উত্তর

৬১. রুশো কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ ১৭৭৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ মন্টেস্কু সম্পর্কে

৬২. মন্টেস্কু কে ছিলেন?

উত্তরঃ মন্টেস্কু হলেন আধুনিক যুগের অন্যতম উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রচিন্তাবিদ। তিনি ১৬৮৯ সালে প্যারিসের লা ব্রিডি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর চিন্তাধারায় স্টোয়িকবাদের প্রভাব অত্যন্ত লক্ষণীয়। আধুনিক রাষ্ট্র দর্শনে তাঁর অবদান ব্যাপক ও বিস্তৃত।

৬৩. মন্টেন্ডুর রচনাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনগুলো?

উত্তরঃ তাঁর রচনাবলির মধ্যে- ১. পার্সিয়ান লেটার্স (১৭২১), ২. কনসিডারেশন অন দি কজেস অব দি গ্রেটনেস এণ্ড ডেক্লাইন অব অব রোম (১৭৩৪, ৩) দি স্পিরিট অব দি লজ (১৭৪৮) সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য।

৬৪. মন্টেঙ্কুর সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য রচনাবলি কোনটি?

উত্তরঃ মন্টেঙ্কুর সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য রচনাবলির নাম হলো- 'দি স্পিরিট অব দি লজ।'

৬৫. 'দি স্পিরিট অব দি লজ' গ্রন্থ তিনি কোন কোন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন?

উত্তরঃ এ গ্রন্থের ভিতরে তিনি শিক্ষা, আইন ও স্বাধীনতা, সমাজে নারীর স্থান, রাষ্ট্র ও সমাজের উপর জলবায়ু, পারিপার্শ্বিকতা ও রীতিনীতির প্রভাব, বাণিজ্য, অর্থনীতি ও ধর্ম এবং রোমান ও সামন্ত আইনের ইতিহাস প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

৬৬. মন্টেস্কু কার দর্শন দ্বারা প্রভাবিত হন?

উত্তরঃ মন্টেস্কু ইংরেজ দার্শনিক জন লকের রাষ্ট্র দর্শনের দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হন।

৬৭. মন্টেঙ্কুর মতে আইন কি?

উত্তরঃ মন্টেস্কুর মতে আইন হলো যে কোন জিনিসের প্রকৃতি থেকে উদ্ভুত স্বাভাবিক সম্পর্কেরই প্রতিফলন। অর্থাৎ মানুষের আচরণের নিয়মগুলোই হলো আইন।

৬৮. মন্টেঙ্কু আইনকে কয় ভাগে বিভক্ত করেছেন?

উত্তরঃ মন্টেঙ্কু আইনকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। যথা- ১. আন্তর্জাতিক আইন, ২. রাজনৈতিক আইন ও ৩. সামাজিক আইন।

৬৯. মন্টেকুর মতে কিভাবে আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক আইনের জন্ম হয়?

উত্তরঃ বিভিন্ন জাতির মধ্যে যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিরাজ করে তা থেকে আন্তর্জাতিক আইনের জন্ম হয়। শাসক ও শাসিতের পারস্পরিক সম্পর্কের ফলে রাজনৈতিক আইন এবং শাসিতের নিজেদের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্কের ফলে সামাজিক আইনের জন্ম হয়।

৭০. মন্টেন্ধু সরকারকে কয় শ্রেণীতে বিভক্ত করেন? শ্রেণীগুলো কি কি?

উত্তরঃ মন্টেঙ্কু সরকারকে প্রধান তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। যথা- প্রজাতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্র। প্রজাতন্ত্রকে তিনি আবার গণতন্ত্র ও অভিজাততন্ত্রে ভাগ করেছেন।

৭১. মন্টেস্কুর মতে স্বাধীনতা কাকে বলে?

উত্তরঃ আইনের বিধান অনুযায়ী কাজ করাকে তিনি স্বাধীনতা বলেছেন।

৭২. মন্টেস্কুর মতে স্বাধীনতা নিশ্চতকরণের সর্বোত্তম পন্থা কোনটি?

উত্তরঃ মন্টেকু ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য নীতিকে স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণের সর্বোত্তম পন্থা বলে উল্লেখ করেছেন।

৭৩. স্বাধীনতা ভোগের ব্যাপারে জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কে মন্টেস্কু কি বলেন? 

উত্তরঃ তিনি বলেন যে, শীত জলবায়ুতে স্বাধীনতা এবং গ্রীষ্মপ্রধান জলবায়ুতে পরাধীনতা ও দাসত্ব বিকাশ লাভ করে। আবহাওয়ার এ পার্থক্যের কারণেই এশিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান দেশগুলোতে সাধারণ স্বৈরাচারী সরকার এবং ইউরোপের শীতপ্রধান দেশগুলোতে গণতান্ত্রিক সরকার পরিলক্ষিত হয়।

৭৪. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির ধারণা সর্বপ্রধান কোন দার্শনিকের মধ্যে দেখা যায়?

উত্তরঃ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের এ আদর্শ যদিও সুদূর অতীতকাল থেকে চলে আসছে তথাপি এর সুস্পষ্ট অভিব্যক্তি আমরা সর্বপ্রথম দেখতে পাই আধুনিক যুগের ইংরেজ দার্শনিক জন লকের মধ্যে। এবং পরবর্তীতে মন্টেকুর দ্বারা এটা প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

৭৫. মন্টেকুর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি কি?

উত্তরঃ সরকারের আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ তিনটি স্বতন্ত্র হয়ে কাজ করবে; এক বিভাগ অন্য বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না এবং অন্যের কর্ম পরিধিতে প্রবেশ করতে পারবে না। একেই মন্টেস্কুর ক্ষমতা নীতির জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।

৭৬. রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে মন্টেস্কু স্মরণীয় কেন?  

উত্তরঃ রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাসে ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কু প্রধানত তাঁর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন।

৭৭. মন্টেন্ধু কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?

উত্তরঃ ১৭৫৫ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আরও পড়ুনঃ সাধারণ জ্ঞান: (দল, সরকার এবং বিরোধীদলের মধ্যে সম্পর্ক) 

সবশেষেঃ

প্রিয় পাঠক এবং শিক্ষার্থী বন্ধুরা, উপরোক্ত বিষয়ের উপর আলোচনা সম্পর্কে আপনাদের আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে পারেন এবং আমাদের ফেইসবুক পেইজে যুক্ত হতে পারন। পরবর্তীতে আরও আপডেট সাধারণ জ্ঞান এবং একাডেমিক শিক্ষামূলক সম্পর্কে তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url