প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স । রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)

প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স- এমএসএস-১ম পর্ব 
(মৌখিক পরীক্ষার জন্য সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর)
রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ 
বিষয় কোড-১৯০১ (প্রথম পত্র)
বিষয়ঃ পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)
অধ্যায়: (প্লেটো, এরিস্টটল, এপিকিউরিয়ানবাদ, স্টোয়িকবাদ)

(অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর)
____________________°___________________

প্রিয় পাঠক এবং মাস্টার্স প্রথম পর্বের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মাস্টার্স প্রথম পর্ব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের, "পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস" "(প্রাচীন যুগ) প্লেটো, এরিস্টটল, এপিকিউরিয়ানবাদ, স্টোয়িকবাদ" এই অধ্যায় থেকে অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে। আমি মনেকরি আপনারা সবাই জানেন যে, মাস্টার্স প্রথম পর্ব পরীক্ষায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস বইয়ের (ক-বিভাগ) থেকে ১০ নম্বরের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বা সাধারন জ্ঞান থাকে। তাই আজ আমি আপনাদের কাছে উক্ত বিষয়ের প্লেটো, এরিস্টটল, এপিকিউরিয়ানবাদ, স্টোয়িকবাদ অধ্যায়ের অতি গুরুত্বপুর্ণ বেশকিছু অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর গুলো তুলে ধরলাম। বিগত বছরের মৌখিক/ভাইভা পরীক্ষাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ভাইভা বোর্ডে অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরগুলো সম্পর্কেই বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাছাড়া লিখিত পরীক্ষাতেও ভালো ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে আশাকরি আপনারা সবাই মনোযোগ দিয়ে সম্পুর্ন আর্টিকেলটি পড়বেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-

প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স । রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স। রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস (প্রাচীন যুগ)  

প্রাচীন যুগ: (প্লেটো, এরিস্টটল, এপিকিউরিয়ানবাদ, স্টোয়িকবাদ)

১. পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস কয় ভাগে বিভক্ত? 

উত্তরঃ পাশ্চাত্য রাষ্ট্রচিন্তার ইতিহাস তিন ভাগে বিভক্ত। যথা- (ক) প্রাচীন যুগ, (খ) মধ্যযুগ এবং (গ) আধুনিক যুগ।

২. প্রাচীন যুগের সময় সীমা নির্ধারণ কর?

উত্তরঃ প্রাচীন যুগের সময় সীমা খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৯ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৬ অব্দ পর্যন্ত।

৩. প্রাচীন যুগের কয়েকজন বিখ্যাত দার্শনিকের নাম বল?

উত্তরঃ এ যুগের প্রখ্যাত দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম হলেন- ১. প্লেটো ও ২. এরিস্টটল। 

৪. সক্রেটিস কে ছিলেন?

উত্তরঃ সক্রেটিস ছিলেন একজন প্রাচীন রাষ্ট্রচিন্তাবিদ।

৫. সক্রেটিস কখন, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ গ্রিসের তৎকালীন শহর এথেন্সের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৯ অব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

৬. 'জ্ঞানই পূণ্য' -এটি কার উক্তি?

উত্তরঃ 'জ্ঞানই পূণ্য' এটি সক্রেটিসের উক্তি।

৭. কেন, কিভাবে সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়?

উত্তরঃ রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগে তৎকালীন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ তাকে হেমলক জাতীয় বিষপানে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেন।

৮. দুই তরবারি তত্ত্ব কি?

উত্তরঃ প্রাচীন কালের খ্রিস্ট্রীয় যাজকগণ বিশ্বাস করতেন যে, পার্থিব ও আধ্যাত্মিক সব রকম ক্ষমতার উৎস বিধাতা তার কর্তৃত্বের প্রতীক স্বরূপ একখানি তরবারি সম্রাটকে এবং আর একখানি দিয়েছেন পোপকে। এ তরবারির সাহায্যে সম্রাট প্রভুত্ব করবেন মানুষের বাহ্যিক জীবনের উপর। আর পোপ কর্তৃত্ব করবেন মানুষের আত্মার উপর। এ তত্ত্বই দুই তরবারি তত্ত্ব নামে পরিচিত।

৯. প্রাচীন নগররাষ্ট্রে কোন কোন ধরনের শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল?

উত্তরঃ প্রাচীন নগর রাষ্ট্রে রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র, স্বৈররতন্ত্র এবং গণতন্ত্র ইত্যাদি ধরনের শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।

১০. গ্রিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রধান বৈশিষ্ট্য কি ছিল?

উত্তরঃ গ্রিক রাষ্ট্রচিন্তার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল যুক্তিবাদিতা।

১১. গ্রিক রাষ্ট্রচিন্তার মূল ভিত্তি কি ছিল?

উত্তরঃ গ্রিক রাষ্ট্রচিন্তার মূল ভিত্তি ছিল নগররাষ্ট্র।

১২. প্রাচীন গ্রিসে আইনের প্রধান উৎস কি ছিল?

উত্তরঃপ্রাচীন গ্রিসে প্রকৃতিকে আইনের প্রধান উৎস মনে করা হতো।

১৩. গ্রিসের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কিরূপ ছিল?

উত্তরঃ প্রাচীন গ্রিসের গণতন্ত্রের পরিধি ছিল খুবই সংকীর্ণ। কেননা নাগরিকরাই কেবল তা ভোগ করত। আবার সকলেই নাগরিক হওয়ার সুযোগ পেত না।

১৪. প্রাচীন গ্রিসের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম বল?

উত্তরঃ প্রাচীন গ্রিসের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ক্রীতদাস ব্যবস্থা, আদালত, পাঁচশত'র পরিষদ, প্রকাশ্য নাগরিক সভা, সৈন্যাধক্ষ বোর্ড ইত্যাদি।

১৫. সোফিস্ট কারা?

উত্তরঃ সোফিস্ট কথাটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এক অর্থে সোফিস্ট বলতে বুঝায় জ্ঞান ও বুদ্ধিতে শ্রেষ্ঠ ও বিচক্ষণ ব্যক্তি। অন্য অর্থে এর অর্থ হলো পেশাদার শিক্ষক যারা জনসাধারণকে বক্তৃতা বা তর্ক বাকপটু ভাল রাজনীতিবিদ হওয়ার কৌশল শিক্ষা দিতেন এবং এর বিনিময়ে এই সোফিস্টরা তাদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করতেন। এজন্য অনেকে এ সোফিস্টদের দার্শনিক না বলে পেশাদার শিক্ষক বলেন।

১৬. কয়েকজন সোফিস্ট চিন্তাবিদের নাম বল?

উত্তরঃ সোফিস্ট দার্শনিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ১. গর্জিয়াস, ২. প্রোটাগোরাস, ৩. থ্রাসিমেকাস, ৪. হিপ্লিয়াস, ৫. প্রডিকাস প্রমুখ।


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ প্লেটো সম্পর্কে 

১৭. প্লেটো কখন, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ৪২৭ অব্দে এথেরের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

১৮. তিনি কোন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রীয় মতবাদ বিশ্লেষণ করেন?

উত্তরঃ অবরোহ পদ্ধতিতে।

১৯. প্লেটোর রচিত তিনখানি বইয়ের নাম বল?

উত্তরঃ (ক) দি রিপাবলিক, (খ) দি স্টেটম্যান, (গ) দি লজ।

২০. প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থে কোন কোন বিষয়ের উপর আলোচনা করেছেন?

উত্তরঃ  প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থে যে সকল বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন সেগুলোর মধ্যে তার আদর্শ রাষ্ট্রের ধারণা, দার্শনিক রাজা, ন্যায় ধর্ম, সাম্যবাদ, শিক্ষানীতি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুনঃ মাস্টার্স শেষ পর্ব- রাষ্ট্রবিজ্ঞান। অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রশাসন এবং আইনগত আদেশ

২১. দি স্টেটসম্যান গ্রন্থে প্লেটো কোন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন?

উত্তরঃ এ গ্রন্থে তিনি অভিভাবক শ্রেণীর শাসনের পরিবর্তে আইনের শাসনের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করেন।

২২. দি লজ গ্রন্থে প্লেটো কোন বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন?

উত্তরঃ এতে তিনি সর্বাপেক্ষা বাস্তব শাসন পদ্ধতির স্বপক্ষে মতামত প্রদান করেন।

২৩. প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য কি?

উত্তরঃ প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্দেশ্য ছিল রাষ্ট্রের নাগরিকদের আদর্শবান করে গড়ে তোলা, সঠিক শ্রেণী তৈরি করা।

২৪. প্লেটোর শিক্ষা ব্যবস্থা কয়টি স্তরে বিভক্ত?

উত্তরঃ প্লেটো তাঁর শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রধানত দু'টি ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- (ক) প্রাথমিক শিক্ষা ও (খ) উচ্চতর শিক্ষা।

২৫. প্লেটোর প্রকৃত নাম কি ছিল?

উত্তরঃ প্লেটোর প্রকৃত নাম ছিল এরিস্টাক্লিজ।

২৬. প্লেটো তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রে কয়টি শ্রেণীর কথা উল্লেখ করেছেন?

উত্তরঃ প্লেটো তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রে তিনটি শ্রেণীর কথা উল্লেখ করেন। যথা- (ক) দার্শনিক বা শাসক শ্রেণী, (খ) যোদ্ধা শ্রেণী, (গ) উৎপাদক শ্রেণী।

২৭. প্লেটোর সাম্যবাদ কি?

উত্তরঃ শাসকের দায়িত্ব পালনকে নির্বিঘ্ন করার উদ্দেশ্যে প্লেটো অভিভাবক তথা শাসক ও সৈন্যবাহিনীর জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও ব্যক্তিগত পরিবার বিলোপের প্রস্তাব করেছেন। এ প্রস্তাবই প্লেটোর সাম্যবাদ নামে পরিচিত।

২৮. প্লেটোর সাম্যবাদ কয়টি ভাগে বিভক্ত?

উত্তরঃ প্লেটোর সাম্যবাদ দু'টি ভাগে বিভক্ত। যথা- (ক) পারিবারিক সাম্যবাদ এবং (খ) সম্পত্তির সাম্যবাদ।

২৯. প্লেটোর সাম্যবাদের সাথে আধুনিক সাম্যবাদের পার্থক্য কোথায়?

উত্তরঃ প্লেটোর সাম্যবাদে অভিভাবক তথা শাসক শ্রেণীর জন্য ব্যক্তিগত সম্পত্তি ও পারিবারিক জীবন দুটোরই বিলোপসাধনের কথা বলা হয়েছে; কিন্তু আধুনিক সাম্যবাদে ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলোপের কথা বলা হলেও ব্যক্তিগত পরিবার জীবনের বিলোপের কথা বলা হয়নি।

৩০. প্লেটোর মতে দার্শনিক কে?

উত্তরঃ প্লেটোর মতে যিনি সর্বোত্তম জ্ঞানের অধিকারী এবং যিনি বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে তার যুক্তি ও জ্ঞানকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম তিনিই হচ্ছেন দার্শনিক।

৩১. প্লেটোর মতে ন্যায় কি?

উত্তরঃ প্লেটোর মতে ন্যায় বলতে প্রতিভা ও যোগ্যতানুযায়ী কর্ম সম্পাদন করাকে বুঝায়।

৩২. প্লেটো গণতন্ত্রী না সর্বাত্মকবাদী ছিলেন?

উত্তরঃ প্লেটো সর্বাত্মকবাদী ছিলেন।

৩৩. 'রিপাবলিক' কোন পদ্ধতিতে রচিত?

উত্তরঃ 'রিপাবলিক' গ্রন্থখানা ডায়ালগ বা কথোপকথন পদ্ধতিতে রচিত।

৩৪. এ গ্রন্থে উল্লেখিত কয়েকটি চরিত্রের নাম উল্লেখ কর?

উত্তরঃ এ বইয়ে উল্লেখিত চরিত্রগুলোর মধ্যে গ্লোকন, সেফালাস, পলিমার্কাস ও থ্রাসিমেকাসের নাম উল্লেখযোগ্য।

৩৫. রাষ্ট্রচিন্তা বিশ্লেষণে প্লেটো কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেন? 

উত্তরঃ প্লেটো তাঁর রাষ্ট্র সম্পর্কিত বিভিন্ন বিশ্লেষণে যে পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাকে প্রধানত আরোহ পদ্ধতি বা  কল্পনামূলক পদ্ধতি বলা হয়।

৩৬. প্লেটো শিক্ষা কেন্দ্রের নাম কি?

উত্তরঃ প্লেটোর শিক্ষা কেন্দ্রের নাম একাডেমি।

৩৭. প্লেটোর একাডেমিকে কি ধরনের জ্ঞানের অনুশীলন হতো?

উত্তরঃ প্লেটোর একাডেমিতে দর্শন, গণিত, বিজ্ঞান, জ্যোতিশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র প্রভৃতি বিষয় অধ্যয়নের ব্যবস্থা ছিল।

৩৮. গণতন্ত্র সম্পর্কে প্লেটোর ধারণা কি?

উত্তরঃ প্লেটোর মতে গণতন্ত্র হলো নীতিহীনতার শাসন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র হলো অযোগ্যতা এবং অজ্ঞতার শাসন।

৩৯. আইন সম্পর্কে প্লেটোর ধারণা কি?

উত্তরঃ আইন সম্পর্কে প্লেটোর ধারণা হলো, আইন মানুষকে তার করণীয় কর্তব্য সম্পর্কে একটি মানদণ্ড প্রদান করে।

৪০. প্লেটো কখন ইন্তেকাল করেন?

উত্তরঃ তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৩৪৭ অব্দে ৮০ বৎসর বয়সে ইন্তেকাল করেন।

আরও পড়ুনঃ প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স ভাইভা পরীক্ষার প্রস্তুতি

 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ এরিস্টটল সম্পর্কে 

৪১. এরিস্টটল কখন কোথায় জন্ম গ্রহণ করেন?

উত্তরঃ এরিস্টটল খ্রিস্ট পূর্ব ৩৮৪ অব্দে স্তাগিরায় জন্মগ্রহণ করেন।

৪২. এরিস্টটলের রচনাবলীর নাম বল?

উত্তরঃ এরিস্টটলের রচনাবলীর মধ্যে দি পলিটিক্স হচ্ছে প্রধান। অন্যগুলো হলো- (ক) এথিকস, (খ) দি লজিক, (গ) দি রেটোরিক, (ঘ) দি কনসটিটিউশন অব এথেন্স বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

৪৩. প্লেটো ও এরিস্টটলের মধ্যে পার্থক্য কি?

 উত্তরঃ

 (ক) প্লেটো ছিলেন ভাব বিলাসী এবং আদর্শবাদী। কিন্তু এরিস্টটল ছিলেন কঠোর বাস্তববাদী।

(খ) প্লেটোর মতে, রাজনীতি নীতিশাস্ত্রের অধীন। নীতি শাস্ত্রেই রাজনীতিকে পরিচালিত করবে। কিন্তু এরিস্টটল রাজনীতি ও নীতিশাস্ত্রকে পৃথক বিষয় হিসাবে বর্ণনা করেন।

(গ) প্লেটোর চিন্তাধারার সর্বাত্মবাদ আর এরিস্টটলের চিন্তাধারায় শাসন তান্ত্রিকতাবাদ প্রাধান্য পায়।

৪৪. নাগরিকতা সম্পর্কে এরিস্টটলের ধারণা কি?

উত্তরঃ তাঁর মতে, নাগরিক সেই ব্যক্তি যে বিচার সংক্রান্ত কার্যে এবং শাসন সংস্থার সদস্য হিসেবে আইন সংক্রান্ত কার্যে অংশ গ্রহণ করে এবং রাষ্ট্রীয় সভার আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।

৪৫. এরিস্টটল কোথায় শিক্ষা গ্রহণ করেন?

উত্তরঃ ১৭ বৎসর বয়সে এথেন্সের প্লেটোর একাডেমিতে ভর্তি হয়ে তার  শিক্ষা গ্রহণ করেন।

৪৬. এরিস্টটল কখন এথেন্সে আসেন?

উত্তরঃ ১৮ বছর বয়সে তিনি এথেন্সে আসেন। সুদীর্ঘ ২৪ বৎসর যাবৎ প্লেটোর একাডেমিতে শিক্ষা লাভ করেন।

৪৭. এরিস্টটলের শিক্ষা কেন্দ্রের নাম কি? এটা কোথায় অবস্থিত?

উত্তরঃ লাইসিয়াম, এটা এথেন্সে অবস্থিত।

৪৮. রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এরিস্টটলের অবদান কি?

উত্তরঃ রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এরিস্টটলের অবদান ছিল অপরিসীম। এরিস্টটল প্রণীত এবং উদ্ভাবিত অনেক মূল্যবান তত্ত্ব বর্তমান কালের রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ভিত্তি স্বরূপ। তাই তাকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের জনক বলেও অভিহিত করা হয়। এরিস্টটলই মানুষকে এক রাজনৈতিক জীব হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র আইনের দ্বারা শাসিত হবে। তাঁর মতে, বল নয়, জনগণের সম্মতিই রাষ্ট্রের ভিত্তি।

৪৯. এরিস্টটলের বিখ্যাত রাজনৈতিক গ্রন্থ কি?

উত্তরঃ পলিটিক্স।

৫০. পলিটিক্সে কি কি বিষয়ের উপর আলোচনা করা হয়েছে?

উত্তরঃ পলিটিক্সে গ্রিক সরকারের বিস্তারিত আলোচনা বিশেষ করে নগর রাষ্ট্র, ক্রীট, কার্মেজ, স্পার্টা ও এথেন্সের শাসন ব্যবস্থা আলোচনা করা হয়েছে। এতে নগর রাষ্ট্রের কতগুলো দোষ-ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে এবং সমাধানের পথ দেখানো হয়েছে।

৫১. এরিস্টটল দাস সম্বন্ধে কি মত পোষণ করেছেন?

উত্তরঃ এরিস্টটলর এর মতে, উত্তম অধমকে শাসন করবে এবং অধম উত্তমের আজ্ঞা পালন করবে। কেননা সকল মানুষ সম পর্যায়ের কার্যক্ষমতা ও প্রকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না।

৫২. এরিস্টটল শিক্ষা সম্বন্ধে কি মত পোষণ করেন?

উত্তরঃ এরিস্টটল রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাকে সমর্থন করেছেন। তিনি কৃষক, শ্রমিক, চর্মকার, দাস ইত্যাদি গণকে নাগরিকের অযোগ্য বলে মনে করেন।

৫৩. এরিস্টটলের রাষ্ট্র এবং সরকারের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ তাঁর মতে, রাষ্ট্র সমস্ত নাগরিকদেরকে নিয়ে গঠিত আর সরকার শুধু যারা শাসনকার্যে অংশ গ্রহণ করে তাদের নিয়ে গঠিত হয়।

৫৪. এরিস্টটল কয়টি দেশের শাসনতন্ত্র পর্যালোচনা করেছেন?

উত্তরঃ ১৫৪টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করেছেন।

৫৫. এরিস্টটল মানব সমাজকে কয় ভাগে ভাগ করেছেন?

উত্তরঃ দু'ভাগে ভাগ করেছেন। যথা- অবসর প্রাপ্ত এবং শ্রমজীবী।

৫৬. এরিস্টটলের মতে বিপ্লব কি?

উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতি জনগণের যে কোন প্রকারের বিরক্তির কারণে শাসনতান্ত্রিক পরিবর্তনকে এরিস্টটল বিপ্লব বলে গণ্য করেন।

৫৭. এরিস্টটলের মতে, কি কি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিপ্লব সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ 

(ক) রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্র পরিবর্তন করতে বিপ্লব সংঘটিত হয়।

(খ) ক্ষমতা লাভের কামনায় রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্র অপরিবর্তনীয় রেখে বিপ্লব সংগঠিত হয়।

(গ) বিপ্লব সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদেরকে আরও শক্ত হাতে শাসন করার সুযোগ দান করে।

(ঘ) নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান বা লোকের বিরুদ্ধে বিপ্লব সংঘটিত হয়ে থাকে।

৫৮. এরিস্টটল কিসের ভিত্তিতে সরকারের শ্রেণী বিভাগ করেন?

উত্তরঃ তিনি শাসকের সংখ্যা ও উদ্দেশ্য নীতির উপর ভিত্তি করে সরকারের শ্রেণীবিভাগ করেছেন।

৫৯. এরিস্টটলের মতে, কোনটি নিকৃষ্ট এবং কোনটি ভাল সরকার?

উত্তরঃ এরিস্টটলের মতে, জনতাতন্ত্র সবচেয়ে নিকৃষ্ট সরকার এবং রাজতন্ত্র আদর্শগতভাবে সর্বোৎকৃষ্ট সরকার। তবে পলিটি বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সরকার হলো সবচেয়ে বাস্তব উপযোগী সরকার।

৬০. এরিস্টটল এবং প্লেটোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কি?

উত্তরঃ এরিস্টটল এবং প্লেটোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো- এরিস্টটল আরোহী পদ্ধতি ব্যবহার করেন অন্যদিকে প্লেটো অবরোহী পদ্ধতি ব্যবহার করেন।

আরও পড়ুনঃ ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে ভারত উপমহাদেশ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে দুইটি রাষ্ট্র গঠনের ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক কারণ সম্পর্কে আলোচনা

৬১. এরিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কেন?

উত্তরঃ গ্রিক দার্শনিকদের মধ্যে এরিস্টটলই সর্বপ্রথম নীতিবিদ্যা থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে আলাদা করেন। এছাড়া তিনি আরোহ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রণয়ন করায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান সুচিন্তিত ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এজন্যই তাকে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয়।

৬২. হেলেনিক ও হেলেনিস্টিক চিন্তাধারা কি?

উত্তরঃ রাষ্ট্রচিন্তায় হেলেনিক অর্থাৎ, গ্রিসীয় এবং হেলেনিস্টিক অর্থাৎ অগ্রীসীয় চিন্তাধারাকে বুঝায়।

৬৩. হেলেনিক চিন্তাধারা কিসের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল?

উত্তরঃ হেলেনিক চিন্তাধারা গড়ে উঠেছিল মূলত প্লেটো ও এরিস্টটলের নগর রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে।

৬৪. এরিস্টটল কত খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন?

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ৩২২ অব্দে।


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদ সম্পর্কে 

৬৫. এপিকিউরিয়ানবাদের প্রতিষ্ঠাতা কে?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদের প্রতিষ্ঠাতা হলেন এপিকিউরিয়াস।

৬৬. এপিকিউরিয়াস কখন, কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়াস খ্রিস্টপূর্ব ৩৪১ অব্দে এথেন্সে জন্মগ্রহণ করেন।

৬৭. এপিকিউরিয়ানবাদীরা কোন মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদীরা ভোগবাদে বিশ্বাসী ছিলেন।

৬৮. এপিকিউরিয়ানবাদের প্রভাব বর্ণনা কর।

উত্তরঃ সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে যে সামাজিক চুক্তি মতবাদ মানুষের চিন্তার রাজ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে তার প্রেরণা লাভ করে মূলত এপিকিউরিয়ানবাদের দর্শন থেকে।

৬৯. এপিকিউরিয়ানবাদের মূল বক্তব্য কি?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদ মানুষকে রাষ্ট্র বা সমাজ থেকে দূরে অবস্থান করার নীতি শিক্ষা দেয়। তাদের মতে, রাজনীতিতে মানুষের অংশগ্রহণ করা উচিত নয়। কেননা একমাত্র রাজনীতির মধ্যেই মানুষকে অত্যন্ত তীব্রভাবে ভাগ্যের চপেটাঘাত সহ্য করতে হয়।

৭০. এপিকিউরিয়ানবাদীরা রাষ্ট্রের উৎপত্তির ব্যাপারে কোন নীতিতে বিশ্বাসী?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদীরা রাষ্ট্রীয় উৎপত্তির চুক্তিবাদী নীতিতে বিশ্বাসী।

৭১. এপিকিউরিয়ানবাদীদের মতে কিভাবে সমাজ, রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের আইন গড়ে উঠে?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদীরা রাষ্ট্রীয় উৎপত্তির চুক্তিবাদী নীতিতে বিশ্বাসী।

৭২. এপিকিউরিয়ানবাদ অনুযায়ী জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য কি?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়ানবাদ অনুযায়ী জীবনের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হচ্ছে সর্বাধিক পরিমাণ আনন্দ বা সুখ অর্জন করা।

৭৩. এপিকিউরিয়ানদের মতে সুখ কি?

উত্তরঃ দুঃখ, বেদনা ও দুশ্চিন্তার অনুপস্থিতিকেই তারা সুখ বলে অভিহিত করেন।

৭৪. এ মতবাদকে সাইরিনাইকবাদের উত্তরসূরী বলা হয় কেন?

উত্তরঃ এপিকিউরিয়াস তাঁর এ মতবাদের প্রেরণা লাভ করেন সক্রেটিসের শিষ্য, সাইরিনের এরিস্টিপাসের নিকট থেকে। এ কারণে এ মতবাদকে সাইরিনাইকবাদের উত্তরসূরী বলেও অভিহিত করা হয়।


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ স্টোয়িকবাদ সম্পর্কে 

৭৫. স্টোয়িকবাদ কি?

উত্তরঃ গ্রিসের চারটি হেলেনিস্টিক স্কুল বা দার্শনিক মতবাদের মধ্যে স্টোয়িক স্কুল হচ্ছে চতুর্থ ও শেষ স্কুল। এ স্কুল থেকে যে মতবাদ বা দার্শনিক তত্ত্ব প্রচারিত হয় ইতিহাসে তা স্টোয়িক দর্শন বা স্টোয়িকবাদ নামে পরিচিতি।

৭৬. স্টোয়িকবাদের প্রতিষ্ঠাতা কে?

উত্তরঃ দার্শনিক জেনো (৩৪২-২৭০ খ্রিঃ পূর্ব) ছিলেন এ মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা।

৭৭. স্টোয়িক দর্শনের প্রাণবিন্দু কি? 

উত্তরঃ স্টোয়িক দর্শনের প্রাণবিন্দু হচ্ছে প্রাকৃতিক আইন ও যুক্তিবাদ।

৭৮. দার্শনিক জেনো কখন জন্মগ্রহণ করেন? 

উত্তরঃ দার্শনিক জেনো খ্রিস্টপূর্ব ৩৪২ অব্দে জন্মগ্রহণ করেন।

৭৯. দার্শনিক জেনো কখন স্টোয়িকবাদ প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দে তিনি এ মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।

৮০. স্টোয়িক মতবাদ অনুসারে সবকিছুর মূল নিয়ন্তা কে?

উত্তরঃ স্টোয়িক মতবাদ অনুসারে সবকিছুর মূল নিয়ন্তা যুক্তি। কেননা যুক্তি সার্বজনীন এবং তা সর্বত্র বিরাজমান।

আরও পড়ুনঃ সাধারণ জ্ঞান: আধুনিক রাষ্ট্রসমূহে সেনাবাহিনীর ভূমিকা

উত্তরঃ স্টোয়িকবাদ অনুযায়ী মানব জীবন প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হয়। 


সবশেষেঃ

প্রিয় পাঠক এবং শিক্ষার্থী বন্ধুরা, উপরোক্ত বিষয়ের উপর আলোচনা সম্পর্কে আপনাদের আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করতে পারেন। আমাদের সাথে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হতে পারেন এবং আমাদের ফেইসবুক পেইজে যুক্ত হতে পারন। পরবর্তীতে আরও আপডেট সাধারণ জ্ঞান এবং একাডেমিক শিক্ষামূলক সম্পর্কে তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারেন।  

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url