মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "ভেলায় ভেসে যায়"। Muktijuddher Kishore Golpo " Velay Veshe Jay


মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প 

লেখকঃ মনি হায়দার 

গল্পের নামঃ ভেলায় ভেসে যায়


সকাল থেকে ওরা তিন জন বারেক, বকুলি আর মিরাজ মিলে একটা কলাগাছের ভেলা বানানোর চেষ্টা করছে। ভেলা বানানো ওদের কাছে কোনো সমস্যা নয়। সকাল থেকে এখন দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেলের কাছাকাছি-তখনও ভেলাটা শেষ করতে পারল না। কারণ ভেলাটা বানাতে কোনো শব্দ করা যাচ্ছে না। শব্দ করলেই অনেকে জেনে যেতে পারে আরও একটা বিপদ- ওদের এ সময় ঘর থেকে কেউ বের হতে দিচ্ছে না।

লেখক মনি হায়দারের মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "ভেলায় ভেসে যায়"
লেখক মনি হায়দারের মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "ভেলায় ভেসে যায়"

তিনটি বড় আকারের কলাগাছ জোগাড় করেছে ওরা। সমান করে পাশাপাশি রেখেছে। সমস্যা হলো- কলাগাছ তিনটিকে তিনটি লম্বা কাঠের সুচালো আঁশ দিয়ে গেঁথে ফেলা। গাঁথতে গেলেই কুড়োল দিয়ে এক প্রান্তে তীব্র আঘাত করতে হয়। আঘাত না করলে কলাগাছ চিরে ভিতরে কাঠের লম্বা টুকরো ঢুকবে কেন? বারেক, বকুলি এবং মিরাজ সেই আঘাতটাই দিতে পারছে না। শব্দ হবে। শব্দের উৎস জেনে লোকজন আসবে। অসময়ে কেন ভেলা বানাচ্ছে এই জাতীয় প্রশ্নে তাদের আসল এবং একমাত্র উদ্দেশ্যটা মাঠে মারা যাবে। তার ওপর যদি ওদের বাবা, মা, বড় ভাইয়েরা আসে তাহলে পিঠে কিলিয়ে কাঁঠাল পাকাবে।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই বারেক হাত-মুখ ধুয়ে ভাত খায়। খাওয়া শেষে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু তিন মাস স্কুল বন্ধ। রাজাকার এবং পাকিস্তানি মিলিটারিরা এসে স্কুলে ক্যাম্প করেছে। চার-পাঁচ গ্রাম মিলিয়ে হৃদয়পুরে একটা মাত্র প্রাইমারি স্কুল। সেটাও অনেক দূরে। প্রায় তিন মাইল হাঁটতে হয়। এখন সে কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ। এমনকি আশপাশে যাওয়াও নিষেধ। বলা তো যায় না কখন কোন রাজাকারের চোখে কে পড়ে-আর রাজাকারেরা ধরে নিয়ে যেতে পারে। বারেকদের বাড়ির ওপরই বকুলিদের ঘর। বারেক আর বকুলি সমবয়সী। পাশের বাড়ির মিরাজ ওদের বন্ধু। তিনজনে মিলে খেলাধুলা করে।

আরও পড়ুনঃ মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "আনিস সাহেবের হাসি"

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মা বলল বারেক, এইভাবে আর ভাত খাওয়া যায় না। রাস্তার ধারে ডোবায় মাছ আছে না?

আছে মা।

ধরতে পারবি?

পারব।

যা, কয়টা মাছ নিয়ে আয়। তাড়াতাড়ি আনিস। আর খবরদার, তোর বাপ যেন জানতে না পারে।

জানবে না মা।

বারেক হাসে মায়ের ভয় পাওয়া দেখে। বাবা টের পাবে কিভাবে? ওরা কত দুষ্টামি করে, বাবা টেরই পায় না। কয়েক দিন আগে বাজার থেকে এসে বাবা বলল- কেউ বাড়ির বাইরে যাবে না। আজকে বাজারে দেখেছি বাচ্চা বাচ্চা ছেলেদের ধরে নিয়ে রাজাকার বানাচ্ছে ওরা।

রাজাকার জিনিসটা কী? প্রশ্নটা মাথার মধ্যে কিলবিল করে। কিন্তু কাকে যে জিজ্ঞেস করবে ভেবে পায় না বারেক। মায়ের কথানুযায়ী বারেক ছোট জাল কাঁধে নিয়ে যেই বাড়ির বাইরে পা রেখেছে অমনি দেখা হয়ে যায় বকুলির সঙ্গে। বকুলি জামতলায় জাম কুড়াচ্ছিল।

মাছ ধরতে যাচ্ছিস?

বারেক মাথা দোলায় হ্যাঁ।

আমাকে নিবি?

যাবি?

যাবো।

আয় তাহলে।

জাম কুড়ানো মাথায় উঠল বকুলির। ছুটল বারেকের পিছু পিছু। ওরা দু'জন যখন রাস্তায় এসেছে ওখন দেখা মিরাজের সঙ্গে। মিরাজ ওদের গাই গরুটাকে ঘাস খাওয়াচ্ছিল রাস্তায় দাঁড়িয়ে।

তোরা কি মাছ ধরতে যাচ্ছিস?

হ্যাঁ! মাথা দোলায় বকুলি।

আমাকে তোদের সঙ্গে নিবি?

আয়-সাড়া দেয় বারেক।

তিনজন একসঙ্গে রাস্তা ভেঙে ধানক্ষেতের ভিতর দিয়ে গল্প করতে করতে ডোবার দিকে যাচ্ছে। সোনালি ধানে ভরা মাঠ। আর কয়েক দিনের মধ্যে চাষীরা ধান কাটবে। তখন ওরা মজা করবে। অপেক্ষা করছে।

হঠাৎ ওরা একটা শব্দ শুনতে পায়। কেমন যেন। মানুষের কাতরানি-অসহ্য যন্ত্রণার শব্দ। চারদিকে তাকায়। না, কেউ কোথাও নেই। সকালের মিষ্টি মৃদু বাতাসে মাথার উপরের ধানগাছগুলো হেলেদুলে নাচছে। সামান্য ভয়ও পেয়েছে ওরা তিনজন। একসঙ্গে গায়ে গা মিশিয়ে হাঁটতে আরম্ভকরেছে। এই সময়ে আবার শব্দটি শুনল। আরো স্পষ্ট। কষ্ট কাতরানি। থমকে দাঁড়াল ওরা তিন জন।

এবার আর কোনো সংশয় নেই। মানুষের শব্দ। কিন্তু কোথায়! মিরাজ আর বারেক সামনে এগোয়। দু'হাতে টেনে ধরে বকুলি।

কী? বকুলিকে জিজ্ঞেস করে বারেক।

আমার ভয় করছে।

ভয় কী! জবাব দেয় মিরাজ- আমরা আছি না।

শব্দটা আবার পায়। ধানক্ষেতের আরো ভিতর থেকে আসছে। ওরা তিনজন গুটিশুটি মেরে শব্দের উৎসের দিকে এগিয়ে যায়। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখতে পায় একজন মানুষ মাটিতে-কাদায় শুয়ে বুক চেপে ধরে যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তার পাশে রক্তের ছোপ। গায়ের জামা ছেঁড়া। লুঙ্গি রক্তাক্ত। শরীরের এখানে সেখানে জখমের চিহ্ন। চোখ ঘোলাটে। হাঁ করে শ্বাস নিচ্ছে। ঘটনার কারণে ওরা শুরুতে খানিকটা ভয় পায়। চুপচাপ দূরে দাঁড়িয়ে লোকটিকে দেখছে। হঠাৎ লোকটাও ওদের দেখতে পায়।

আরও পড়ুনঃ একজন মুক্তিযোদ্ধা দাদুর গল্প। লেখক মনি হায়দার

তোমরা কারা? লোকটা কঁকিয়ে দুর্বল কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো।

আমরা ওই গ্রামের। ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয় বারেক।

সঙ্গে সঙ্গে মিরাজ জিজ্ঞেস করে- আপনি কে?

আমি একজন আহত মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযোদ্ধা! তিন জনই একসঙ্গে উচ্চারণ করে।

এতদিন এখানে-সেখানে নানা আলোচনায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম শুনে আসছে। বিশেষ করে মিরাজ। মিরাজের আব্বা একজন রাজাকার। সে ঘরে প্রায়ই মুক্তিযোদ্ধাদের গালিগালাজ করে। মুক্তিরা অসম সাহসী।

চিতাবাঘের গতি তাদের। গুলির নিশানা কখনও ভুল হয় না। আর এখন কিনা ধানক্ষেতে একজন মুক্তিযোদ্ধা রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে! কি করা উচিত কিছুই বুঝতে পারছে না ওরা।

মুক্তিযোদ্ধা ওদেরকে ইশারায় ডাকল। ইতস্ততভাবে কাছে এগিয়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধা তার জামার বুক পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে ওদের দিকে বাড়িয়ে ধরে। বারেক কাগজটা হাতে নিয়ে দেখে- একটা চিঠি।

'বন্ধু, আমি দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। জানি না কতদিন বাঁচব- পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করে। যদি কখনো মরে যাই- যারা আমার লাশটা পাবেন তারা দয়া করে ভেলায় ভাসিয়ে দেবেন। যাতে নদীতে ভাসতে ভাসতে আমি আমার গ্রামে, সুবর্ণপুরে, মায়ের কাছে পৌঁছতে পারি। আমি আমার মায়ের একমাত্র সন্তান। আমি আমার মাকে বড় ভালোবাসি। ইতি- বন্ধু সূর্য।'

তিনজনে মিলে চিঠিটা পড়ে। বুকের মধ্যে কেমন এক উত্থাল-পাতাল মায়া বান ডেকে ওঠে ওদের। বকুলি তো কেঁদেই ফেলে। বকুলির কান্না আক্রান্ত করে মিরাজ আর বারেককেও। মাছধরা পড়ে রইল। তিন জনে মিলে সিদ্ধান্ত নেয়- ভেলা ওরাই বানাবে এবং গোপনে।

সেই সকাল থেকে তিন জনে মিলে একটি ভেলা বানিয়েছে অনেক কষ্টে। ভুলে গেছে ঘরবাড়ির কথা। শাসন-শোষণ কোনো কিছুই ওদের মনে পড়েনি। ভেলা বানাতে গিয়ে পা কেটেছে বারেকের। মিরাজের কেটেছে হাত। বকুলির কিছু না হলেও সারাদিনের পরিশ্রমে দারুণ ক্লান্ত সে। সারাদিনে খাওয়ার কথা ওদের মনেই ছিল না। এখনও এই ভর সন্ধ্যায়ও পেটে ক্ষুধা অনুভব করে না বকুলি, মিরাজ আর বারেক। ভেলা বানিয়ে অনেক কষ্টে টেনে-হিঁচড়ে খালে নামিয়েছে। কিন্তু লাশটা কিভাবে টেনে নেবে প্রায় তিনশো হাত দূরের খালে- ভাসমান ভেলায়?

আরও পড়ুনঃ মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "পরীরানী"। লেখক মনি হায়দার

চিঠিটা পাঠ করে ওরা তাকাতেই দেখেছিল মুক্তিযোদ্ধা আর বেঁচে নেই। তখন সকাল দশটা-এগারোটা। এখন ভর সন্ধ্যা। তিন জনে মিলে লাশটাকে টানছে। একচুলও নড়াতে পারছে না। ইতোমধ্যে রক্তের টানে প্রচুর পোকা এসে জড়ো হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধার শরীরের ওপর পোকদের একটা রাজত্ব চলছে। লাশটাকে ঘিরে তিন জন বসে পরামর্শ করে। সবাই লুকিয়ে বাড়িতে যাবে এবং দড়ি চুরি করে নিয়ে আসবে। দড়িবেঁধে তিন জন টানলে লাশটি নিশ্চয়ই নেয়া যাবে। সেই সঙ্গে মিরাজ যদি ঘর থেকে মলম আনতে পারে। আহা- দুপুর থেকে এক নাগাড়ে রক্ত ঝরছে। ব্যথায় পা-টা টনটন করছে শুরু থেকেই। দাঁতে দাঁত চেপে কাজ করে যায়।

মিরাজ গরুর গোয়াল থেকে লম্বা একটা দড়ি জোগাড় করে। ওর বাবা আব্বাস আলি খা একদল লোকের সঙ্গে বেরিয়ে গেল- গোয়ালঘরের আড়াল থেকে দেখে ও। কোনো দিন ওর বাবার প্রতি ঘৃণা জন্মেনি। কিন্তু এই মুহূর্ত বাবাকে খুব ঘৃণা করতে ইচ্ছে হয়। ক্ষুধায় কাতর মিরাজ চুপি চুপি ঘরে ঢোকে। ও জানে মায়ের আলমারির কোণায় একটা মলম আছে। যে মলমটি কাটা-ছেঁড়ায় ব্যবহার করে সবাই। মা রান্নাঘরে রান্নায় ব্যস্ত।

কাকে যেন ডেকে বলল- দেখ তো কোথায় গেল মিরাজ? সকাল থেকে বাচ্চাটা ঘরে আসছে না- ওর বাপকে বললাম সে কোনো কথা না বলে দলের লোকদের নিয়ে চলে গেল। এই বাইরের লোকগুলোই একদিন তার মরণের কারণ হবে- মা আনমনে বকে যাচ্ছে- এই আছিয়া, যা তো, একটু বাইরে দেখ মিরাজ কোথায়?

মিরাজের মুখে হাসি ফোটে। মা জানে না যে মিরাজ এখন ঘরের মধ্যে আলমারি খুলে মলম নিচ্ছে। হঠাৎ মলমের শিশিটা পড়ে যায়। শব্দ হয় ভীষণ। মা দৌড়ে আসে- কে এখানে?

মিরাজকে দেখে অবাক-

তুই এখানে কী করছিস?

কিছু না মা।

তোর হাতে কি।

মা অবাক চোখে দেখে মিরাজের একহাতে একগাছি লম্বা দড়ি, অন্য হাতে মলম। মুখ শুকনো। সারা শরীরে কাদার আস্তরণ।

এসব নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস? কোথায় ছিলি সারাদিন? তোর সঙ্গে কি বকুলি আর বারেক? ওদের মা খুঁজতে এসেছিল। তোরা কী করছিস?

মিরাজ দেখল অবস্থা বেগতিক। মাকে সব খুলে বলল। মা মিরাজকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল- আহা বাছারা, তোরা তো খুবই ভালো কাজ করছিস। কিন্তু তোর বাপ যেন টের না পায়।

আরও পড়ুনঃ মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প "রহস্যময় মানুষ"

পেলে?

তোকেসহ সবাইকে জবাই করবে।

কেন?

সে তো রাজাকার।

রাজাকার কী?

অতশত বুঝি না বাবা। তবে রাজাকাররা দেশের ভালো চায় না। চায় পাকিস্তানের ভালো। দেখছিস না মুক্তিযোদ্ধাদের মারার জন্য পাগলা কুত্তার মতো ঘুরে।

তাহলে মা ...

কিচ্ছু ভাবিস না। আমি তোদের সঙ্গে আছি। যেভাবেই হোক একটা ব্যবস্থা করব। এখন চল তো ছেলেটার মুখ দেখি।

যাবে, মা?

যাব না! আহা, কোন মায়ের আদরের ধন, চোখের মণি, ধানক্ষেতে মরে পড়ে আছে। মায়ের চোখে জল।

মা, মিরাজ, কাজের মেয়ে আছিয়া সন্ধ্যার মৃদু জোছনায় রাস্তায় নামে।

ধানক্ষেতের ভিতর দিয়ে চলে আসে মুক্তিযোদ্ধার সিঁথানে। সবল, সমর্থবান, পেশিবহুল একটি মানুষ লাশ হয়ে শুয়ে আছে। কোথাকার কোন যুদ্ধে সে গুলিবিদ্ধ হয়ে কত কষ্ট সহ্য করে এখানে এসেছিল? হুঁ হুঁ করে কাঁদে মা।

এমন সময়ে আরো মানুষের পদশব্দ শুনতে পায় ওরা। কী ব্যাপার! ভয়ে ধানক্ষেতের ভিতরে আড়ালে লুকায়। আসলে বকুলি আর বারেকও ধরা পড়েছে ওদের মায়ের কাছে। সব শুনে তারা এসেছে দেখতে। ওদের দেখে সাহসে বেরিয়ে আসে মিরাজ এবং মিরাজের মা।

আকাশে চাঁদ উঠেছে।

চারদিকে শীতের হালকা গাঢ় কুয়াশার চাদর বিছানো। ধানের ডগায় শিশিরের শুভ্র মেলা। দুঃখের সুরে চারপাশের মৌনতা করুণ বেদনামথিত যন্ত্রণায় কাঁদছে। সবার চোখে পানি। টলমল করে। বারেকের মা লাশটায়

হাত রাখে। চোখে-মুখে-মাথায় হাত ছোঁয়ায়।

তোদের কাছে কী নাম বলেছে? জিজ্ঞেস করে বারেকের মা।

না মা, নাম বলেনি।

বকুলি বলে- কীভাবে বলবে, বলার সময় পায়নি। কাগজটা হাতে দিল। আমরা পড়লাম। তাকিয়ে দেখি সে মরে গেছে।

বকুলি, মিরাজ, বারেক, ওদের মা, কাজের বুয়ারা মিলে পরম যত্নে লাশটিকে বহন করে খালের পাড়ে নিয়ে যায়। গভীর মমতায় লাশটিকে ভেলায় ওঠায়। কেউ দেখবার আগে লাশটিকে ভাসিয়ে দেয় স্রোতে। আকাশ ভরা সাদা জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে মাঠ ঘাট নদী আর নদীর ছলছল কলকল ভাটিয়ালি বারুদের স্রোত। প্রত্যেকের চোখে জলের ধারা। সেই সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে অমৃত পুত্রের এই ভেলাখানা; দূরে, বহুদূরে ধীরে ধীরে শোকের মূর্ছনায়।

তীরে দাঁড়িয়ে দেখছে সবাই। চোখে সাত সমুদ্রের কান্না।


সবশেষে: প্রিয় পাঠক, গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে কমেন্ট বক্সে জানাবেন? এবং 'মনি হায়দার' এর লেখা মুক্তিযুদ্ধের কিশোর গল্প পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ ভিজিট করতে পারেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url